ছিনতাইকারীদের ধাওয়া করে নিজেদের লুঠ হওয়া টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে তাদের হাতে বেধড়ক মার খেলেন দুই ব্যবসায়ী। সম্পর্কে কাকা-ভাইপো দু’জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও পরে তাঁদের কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বুধবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে আরামাবাগের বেঙ্গাই চৌমাথার কাছে। এসডিপিও (আরামবাগ) শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া একটি মোটর সাইকেলের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম সুশান্ত মালিক। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থানার জারা গ্রামে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫ হাজার টাকা। আর একটি মোটর সাইকেলও উদ্ধার হয়েছে। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কামারপুকুর চটিতে সবচেয়ে বড় মুদিখানার দোকানটি বলরাম নন্দী ও সুশান্ত নন্দীর। সুশান্ত সম্পর্কে বলরামবাবুর ভাইপো। প্রতিদিনের মতো কাকা ও ভাইপো রাত ৯টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে মোট সাইকেলে দেড় কিলোমিটার দূরে দশঘরায় বাড়ি ফিরছিলেন। বলবামবাবু জানান, বৃহস্পতিবার কলকাতায় মহাজনদের পেমেন্ট থাকায় ব্যাঙ্ক থেকে তোলা ২ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা ছাড়াও সারাদিনের বিক্রি বাবদ আরও লক্ষাধিক টাকা ছিল তাঁর ব্যাগে। গ্রামে ঢোকার মুখে বিরাট একটি ফাঁকা মাঠ রয়েছে। তার কাছাকাটি আসতেই পিছন থেকে আসা দু’টি মোটর সাইকেলে তিন আরোহী তাঁদের পথ আটকায়। সুশান্তবাবু বলেন, “কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা আমাদের ঘুঁসি, চড় মেরে কাকার কাঁধ থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে বেঙ্গাইয়ের দিকে পালাতে থাকে। কোনওমতে নিজেদের সামলে নিয়ে আমরাও পাল্টা মোটর সাইকেলে ওদের তাড়া করি।”
ছিনতাইকারীদের তাড়া করে তাঁরা বেঙ্গাইতে তাদের ধরে ফেলেন। সুশান্ত জানান, মোটর সাইকেল থেকে নেমেই তিনি দুষ্কৃতীদের একটি মোটর সাইকেলের চাবি খুলে অন্ধকারে ছুঁড়ে দেন। এরপর টাকার ব্যাগ উদ্ধার করতে গেলে দু’পক্ষে ধস্তাধস্তি, মারামারি বাধে। বলরামবাবু বলেন, “বয়সের কারণে এবং হৃদরোগ থাকায় আমাকে সহজেই কাবু করে ওরা। ওরা তিন জন ছিল। ভাইপো একজনের পা ধরে তাকে কাবু করে ফেলে। আর একজনকে আমি আঁকড়ে ধরে চিৎকার করতে থাকি। তাতে কয়েকজন জনো হলেও কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। তারই সুযোগে তৃতীয় জন টাকার ব্যাগটা নিয়ে মোটর সাইকেলে করে পালিয়ে যায়।” তিনি আরও জানান, তাঁর হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে ওই দুষ্কৃতী লোহার অস্ত্র দিয়ে তাঁর মুখ-মাথা ফাটিয়ে দেয়। একইভাবে ভাইপোকেও পিছন থেকে মাথা ফাটিয়ে সঙ্গীকে নিয়ে মাঠ দিয়ে পালায়।