তরুণকে গুলি করে খুন, ধৃত শ্রীরামপুরে

রাতের অন্ধকারে বাড়ির অদূরে গুলিতে খুন হয়ে গেল শ্রীরামপুরের এক তরুণ। রবিবার নেহরুনগর কলোনির বাসিন্দা গৌতম ধর ওরফে বান্টি (১৭) নামে ওই তরুণের রক্তাক্ত দেহ মেলে পাশের শশীভূষণ ঘোষ লেনের এক বাড়ির রক থেকে। সোমবার বিকেলে ওই বাড়িরই ভাড়াটে যুবক রাজু আড্যিকে খুনের অভিযোগে শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। খুনের প্রতিবাদে এবং ধৃতকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে ওই এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা এ দিন সন্ধ্যায় জি টি রোড অবরোধ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৪:৩৯
Share:

রাতের অন্ধকারে বাড়ির অদূরে গুলিতে খুন হয়ে গেল শ্রীরামপুরের এক তরুণ। রবিবার নেহরুনগর কলোনির বাসিন্দা গৌতম ধর ওরফে বান্টি (১৭) নামে ওই তরুণের রক্তাক্ত দেহ মেলে পাশের শশীভূষণ ঘোষ লেনের এক বাড়ির রক থেকে। সোমবার বিকেলে ওই বাড়িরই ভাড়াটে যুবক রাজু আড্যিকে খুনের অভিযোগে শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। খুনের প্রতিবাদে এবং ধৃতকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে ওই এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা এ দিন সন্ধ্যায় জি টি রোড অবরোধ করেন।

Advertisement

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত অপরাধের কথা কবুল করেছে। তার ঘর থেকে খুনে ব্যবহৃত পাইপগান এবং একটি রক্তমাখা কাপড় মিলেছে। ঘরে রক্তের দাগ এবং ধস্তাধস্তির চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে। তবে, কী কারণে রাজু গৌতমকে খুন করল, সে ব্যাপারে রাত পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানা যায়নি। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। খুনের কারণ নিয়ে অন্ধকারে নিহতের পরিবারের লোকজন।

তদন্তকারীদের অনুমান, পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে এই খুন। যে রকে দেহটি পড়ে ছিল, সেখানেই খুব সামনে থেকে গৌতমের ঘাড়ে গুলি করা হয়। গলার কাছ দিয়ে গুলি বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তবে, রাজু একা ছিল, না কি খুনের সময়ে তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল, সে ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত নয়।

Advertisement

নিহতের বাবা, পেশায় রিকশাচালক বুদ্ধুবাবু বলেন, “ছেলের দেহ উদ্ধারের সময়ে রাজুর ঘরে কেউ না থাকলেও আলো জ্বলছিল। মেঝেতে রক্তের দাগও ছিল। কিন্তু কেন রাজু ওকে মারল, কিছুই বুঝতে পারছি না। ছেলের কোনও শত্রু ছিল না।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীরামপুরের ছোটবেলুতে একটি দরজা-জানলা তৈরির কারখানায় কাজ করত গৌতম। রবিবার সে কাজে যায়নি। বাড়িতেই ছিল। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সে খেতে বসে। সেই সময়ে তার মোবাইলে একটি ফোন আসে। এর পরেই গৌতম বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক বাদে শশীভূষণ ঘোষ লেনের থার্ড বাই লেনের রকে তার দেহ মেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায়। নিহতের মোবাইল ফোনটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। বুদ্ধুবাবু রাজুুর নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

নিহতের মা টিঙ্কুদেবী বলেন, ‘‘ছেলে রোজ রাতেই বন্ধুর বাড়ি বা ক্লাবে গিয়ে বিশ্বকাপের খেলা দেখত। রবিবারেও ওকে বেরোতে দেখে তা-ই ভেবেছিলাম। কিন্তু কেন যে ওকে খুন করা হল, ভেবে পাচ্ছি না। ছেলের সঙ্গে কারও কখনও শত্রুতা ছিল বলে তো শুনিনি।’’

ওই এলাকায় ভাল ছেলে বলেই পরিচিত ছিল গৌতম। ভাল ফুটবলও খেলত। কাজের জায়গাতেও সুনাম ছিল। তাঁর এ ভাবে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। রাজুর গ্রেফতারের খবর জানাজানি হওয়ার পরেই সেই উত্তেজনা বাড়ে। ময়না-তদন্তের পরে এ দিন দেহ নিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দারা শশীভূষণ ঘোষ লেন সংলগ্ন জি টি রোড অবরোধ করেন সন্ধ্যা ৬টা থেকে। ঘণ্টাদেড়েক অবরোধ চলার পরে শ্রীরামপুরের আইসি প্রিয়ব্রত বক্সি যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন