শ্রীরামপুরে মহিলা থানার সামনে সভা মঙ্গলবার রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর। ছবি: প্রকাশ পাল।
দিন কয়েক আগে শ্রীরামপুরের তালপুকুর এলাকার চলচ্ছক্তিহীন এবং মূক-বধির এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। সেই তরুণীর পাশে দাঁড়াতে এসে ধর্ষণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুললেন রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার শ্রীরামপুর মহিলা থানার পাশে সভা হয় প্রতিবন্ধীদের সংগঠনটির তরফে। সেখানেই ওই দাবি তোলেন কান্তিবাবু।
বেড়ে চলা নারী নির্যাতন নিয়ে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে কান্তিবাবু বলেন, “কিশোরী, যুবতীদের উপরে অত্যাচারে এই রাজ্য যেন রেকর্ড করেছে। বাইরে কোথাও গেলে মাথা হেঁট হয়ে যায়। একটার পর একটা ঘটনা ঘটে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রসচিব সকলের কাছে বিচার চেয়েছি। একটা চিঠিরও জবাব পাইনি।’’ তার পরেই শ্রীরামপুরের তরুণীর প্রসঙ্গ তুলে প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তিবাবু বলেন, “মেয়েটি কি বিচার পাবে না? মুখ্যমন্ত্রীর সংবেদনশীলতা কোনও ক্ষেত্রেই তো খুঁজে পেলাম না। উপর থেকে যে নির্দেশ আসবে তা-ই তো মানবেন থানার অফিসারেরা। শুধু আসামি ধরলেই হবে না। জেল হাজতে থাকা অবস্থায় যেন বিচার হয়।”
এ দিন ওই তরুণী এবং তাঁর মায়ের হাতে আর্থিক সাহায্য হিসেবে ১০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয় সংগঠনের তরফে। অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মিছিলও হয়। তার আগে শ্রীরামপুর মহিলা থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। কান্তিবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক কিন্নর রায়, লেখিকা মন্দাক্রান্তা সেন, নাট্যকার চন্দন সেন, অনিন্দিতা সর্বাধিকারী, ভারতী মুৎসুদ্দিদের মতো পরিচিত বাম-বিদ্বজ্জনেরা। তাঁরাও নারী নির্যাতন প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।
চলচ্ছক্তিহীন, মূক-বধির ওই তরুণীর বাবা দৃষ্টিশক্তিহীন। মা পরিচারিকার কাজ করেন। গত ৩১ ডিসেম্বর ওই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ অলোক দেবনাথ নামে তাঁর এক প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করে। তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। তাঁর জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা ও পরিবারটির জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থারও দাবি জানান কান্তিবাবু। অত্যাচারীর শাস্তির ব্যবস্থার জন্য নাম না করে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানান। জেলা পুলিশের এক অফিসার জানান, আইনানুগ সমস্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। যথাযথ ভাবে ঘটনার তদন্ত করা হবে।