বিএসএফ জওয়ানকে মারধর

পুলিশের উপর হামলায় দুই তৃণমূল কর্মী-সহ গ্রেফতার ৫

হর্ন বাজানোর প্রতিবাদ করায় বৃহস্পতিবার দুপুরে আরামবাগের পুরনো বাজারে স্থানীয় বাদলকোনার বাসিন্দা এক বিএসএফ জওয়ানকে মারধোরের অভিযোগ ছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই রাতেই আরামবাগ হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন তয়ন যশ নামে ওই জওয়ানকে দেখতে গিয়ে পাল্টা আক্রান্ত হন আরামবাগ থানার আইসি অলকরঞ্জন মুন্সি এবং সজলকুমার মন্ডল নামে এক পুলিশ অফিসার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৪
Share:

হর্ন বাজানোর প্রতিবাদ করায় বৃহস্পতিবার দুপুরে আরামবাগের পুরনো বাজারে স্থানীয় বাদলকোনার বাসিন্দা এক বিএসএফ জওয়ানকে মারধোরের অভিযোগ ছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই রাতেই আরামবাগ হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন তয়ন যশ নামে ওই জওয়ানকে দেখতে গিয়ে পাল্টা আক্রান্ত হন আরামবাগ থানার আইসি অলকরঞ্জন মুন্সি এবং সজলকুমার মন্ডল নামে এক পুলিশ অফিসার। মামলা দায়ের করা নিয়ে পুলিশ গড়িমসি করছে ওই অভিযোগ তুলে জওয়ানের পরিবারের তরফে হাসপতাল চত্বরেই তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট ১০ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি জয়দুলাল সোমের নেতৃত্বে ওই হামলা হয় বলে পুলিশের অভিযোগ। পুলিশও লাঠি চালিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ তয়নের পরিবারের। যদিও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। জয়দুলাল সোম-সহ ২৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে তৃণমূলের দুই সক্রিয় কর্মী মৃত্যুঞ্জয় কোনার ও পবিত্র যশ সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে আহত জওয়ানের দাদা নয়ন যশ এবং দুই প্রতিবেশি বেণীমাধব যশ ও নীলমাধব যশও আছেন। আরামবাগ থানার আই সি অলকরঞ্জন মুন্সি জানান, জয়দুলাল পলাতক।

Advertisement

শুক্রবার ধৃতদের আরামবাগ আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ইত্যাদি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন জয়দুলাল সোম। তিনি বলেন, “আমি ওখানে গণ্ডগোল থামানোর জন্য গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছিলাম। একইসঙ্গে পুলিশের এলোপাতাড়ি লাঠি চার্জ নিয়েও প্রতিবাদ করেছি। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয় হাসপাতাল চত্বরে রাতে থাকা সাধারণ রোগীর আত্মীয়দেরও পেটাচ্ছিল পুলিশ।” পুলিশের উপর হামলায় দলীয় নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ নিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দলের আরামবাগ ব্লক সভাপতি স্বপন নন্দীকে এ বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছি। পুলিশের উপর হামলায় জয়দুলালের মদত ছিল প্রমাণ হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”

Advertisement

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে রাত ৯টা নাগাদ আহত জওয়ানকে দেখে আইসি এবং ওই পুলিশ অফিসার বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় বাদলকোনা থেকে আসা শ’খানেক মানুষ তাঁদের ঘিরে ফেলে। আইসিকে টানাহ্যাঁচড়া করলেও, ফাঁড়ি ইনচার্জ তথা সশস্ত্র পুলিশের অফিসার সজলকুমার মণ্ডলকে প্রচণ্ড মারধর করে। গুরুতর আহত সজলবাবুকে রাতেই আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পর বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে উত্তেজিত জনতাকে হটিয়ে দেয়। অভিযোগ সেই সময় পুলিশ লাঠি চালায়।

এদিকে রাতে হাসপাতাল চত্বরে গোলমালের ঘটনার পরই বিএসএফ তয়ন যশকে মারধরের অভিযোগ নিয়ে যেমন মামলা রুজু হয়েছে, তেমনি তয়নের বিরুদ্ধে রাইফেল ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগও নিয়েও মামলা রুজু হয়েছে। তবে দু’টি মামলাতেই অবশ্য এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। এ ব্যাপারে আরামবাগ থানার আই সি জানান, দু’টি মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা চিকিত্‌সাধীন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement