সরকারি তহবিলের মুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে জেলার পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলি যাতে নিজস্ব তহবিল বাড়ায়, সে ব্যাপারে জোর দিচ্ছে হুগলি জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি চন্দননগর রবীন্দ্রভবনে প্রশাসন আয়োজিত জেলা পঞ্চায়েত সম্মেলনেও এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়। যাতে বাড়তি আয় পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি এলাকা উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুমন ঘোষ বলেন, “তহবিল পুষ্ট করলেই শুধু হবে না। সেই তহবিল অফিস খরচে বেশি কাজে না লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার উন্নয়নে লাগাতে হবে। কোনও সরকারি প্রকল্পের টাকা ফেলে রাখা যাবে না।”
সম্মেলনে জেলার ২০৭টি পঞ্চায়েত এবং ১৮টি পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারীদের ডাকা হয়েছিল। চাওয়া হয়েছিল ২০১১-’১২ অর্থবর্ষ থেকে চলতি অর্থবর্ষের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কে কত খরচ করতে পেরেছে সেই তথ্য। তা থেকেই পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির দুর্বলতা ও ত্রুটিগুলি খতিয়ে দেখা হয়। এ নিয়ে আলোচনাও হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতগুলির অধিকাংশই নিজস্ব তহবিল সৃষ্টির ক্ষেত্র ভূমি ও গৃহকর আদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সে তুলনায় পঞ্চায়েত সমিতিগুলি কিছু পুকুর ইজারা দিয়ে টোল ও লেভি আদায় করে কর বহির্ভুত আয় করে। যদিও পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলি কোন কোন ক্ষেত্রে কর বহির্ভূত আয় আদায় করতে পারবে, তা নিয়ে সরকারি বিস্তর তালিকা থাকলেও বিশেষ উদ্যোগী হয় না। যেমন খুচরো ও পাইকারি ব্যবসার নিবন্ধীকরণ ফি, যানবাহন নিবন্ধীকরণ ফি, মোটর চালিত গভীর-অগভীর ও ছোট নলকূপের ব্যক্তিগত উদ্যোগের নিবন্ধীকরণ ফি, পঞ্চায়েত এলাকর সমস্ত রাস্তা-ফেরি-সেতুর টোল আদায় ইত্যাদি। এমনকী জরিমানা বাবদও অর্থ গ্রহণ করতে পারবে। এ সবই ওই সম্মেলনে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারীদের জানানো হয়।
ওই সব ক্ষেত্রগুলি কেন ছোঁয়া হচ্ছে না? কয়েকটি পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের বক্তব্য, স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সেই ঝুঁকি নেওয়া হয় না।