পরিত্যক্ত পুলিশ ক্যাম্পে তালা প্রশাসনের, বন্ধ প্রাথমিকের ক্লাস

সদ্য অনুমোদন মিললেও ভবন নির্মাণ হয়নি। তাই এক মাস ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার হাতিবাড়ি গ্রামের একটি প্রাথমিক স্কুল চলছিল লাগোয়া হুগলির গোঘাটের ভেউটিয়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত পুলিশ ক্যাম্পে। শুক্রবার ক্লাস চলাকালীন পুলিশ নিয়ে গিয়ে সেই ঘর থেকে স্কুল সরিয়ে দিয়ে তালা মেরে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গোঘাট-২ ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা এখন স্কুল কোথায় করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০১:২৪
Share:

সদ্য অনুমোদন মিললেও ভবন নির্মাণ হয়নি। তাই এক মাস ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার হাতিবাড়ি গ্রামের একটি প্রাথমিক স্কুল চলছিল লাগোয়া হুগলির গোঘাটের ভেউটিয়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত পুলিশ ক্যাম্পে। শুক্রবার ক্লাস চলাকালীন পুলিশ নিয়ে গিয়ে সেই ঘর থেকে স্কুল সরিয়ে দিয়ে তালা মেরে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গোঘাট-২ ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা এখন স্কুল কোথায় করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

Advertisement

পরিত্যক্ত পুলিশ ক্যাম্পে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ মেনে নিয়েছেন গোঘাট-২ ব্লকের বিডিও শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, “প্রথমত গড়বেতা থানা এলাকার ওই স্কুল চালাতে প্রশাসনিক কোনও অনুমতি নেননি কর্তৃপক্ষ। ওই পরিত্যক্ত পুলিশ ক্যাম্পে রাতে অসামাজিক কাজকর্ম চলে, স্থানীয় লোকজনের থেকে এই অভিযোগ মেলায় ক্যাম্পটি সিল করা হয়েছে।” তাঁরা যে কোনও অনুমতি ছাড়াই ওই পুলিশ ক্যাম্পে স্কুল চালাচ্ছিলেন সে কথা মেনে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বর।

তবে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের গড়বেতা-১ চক্রের স্কুল পরিদর্শক শিষাদ্রি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কী কারণে গোঘাট-২ ব্লক প্রশাসন ওই পুলিশ ক্যাম্প বন্ধ করলেন জানা নেই। তবে স্কুল বন্ধ হবে না। আপাতত গ্রামেরই কোনও চালায় যথারীতি স্কুল চলবে।”

Advertisement

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশাপাশি দুই জেলায় রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভেউটিয়া গ্রামে ২০০০ সালে ওই পুলিশ ক্যাম্পটি চালু হয়। ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ক্যাম্প তুলে নেওয়া হয়।

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, হাতিবাড়ি গ্রামের ওই স্কুলটির সরাকরি অনুমোদন মেলে গত জানুয়ারি মাসে। গত ১১ জুলাই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে পরিত্যক্ত ওই পুলিশ ক্যাম্প চালু হয়। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১২। গড়বেতা-১ চক্রের অন্য স্কুলের দুই শিক্ষককে অস্থায়ী ভাবে ওই স্কুলটির পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এ দিনের ওই ঘটনার পরে প্রধান শিক্ষক বলেন, “প্রশাসনের কর্তারা পুলিশ ক্যাম্পের ঘরে ঢুকে স্কুল চালানোর অনুমতি দেখতে চেয়েছিলেন। তা ছিল না। যে ভাবে আমাদের বেরিয়ে যেতে বলা হয় তাতে অপমানিত বোধ করি। স্কুলের নিজস্ব ভবন না হওয়া অব্দি কোথায় ক্লাস হবে, নাকি স্কুল বন্ধ থাকবে, সে ব্যাপারে স্কুল পরিদর্শকই সিদ্ধান্ত নেবেন।”

রাতে ওই পরিত্যক্ত পুলিশ ক্যাম্পে অসামাজিক কাজকর্ম চলার যে অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন বলে গোঘাট-২ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা দাবি করেছেন, তা মানতে চাননি দুই গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের পাল্টা দাবি, ওখানে রাত-পাহারার ব্যবস্থা রয়েছে। কোনওরকম অসামাজিক কাজ হয় না। ব্লক প্রশাসন অন্যায় ভাবে ঘরটিতে তালা মেরে দিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন