ফাঁদ পেতে প্রতারককে ধরল পুলিশ

বন্ধ হয়ে যাওয়া অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যাঙ্কে এসেছিলেন বছর পঁচিশের এক যুবক। কিন্তু কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে বলে তাঁকে দাঁড় করিয়ে রাখেন এক ব্যাঙ্ককর্মী। আচমকা ওই যুবকের পিছনে এসে দাঁড়ান আরও দুই যুবক। কিছু পরেই তাঁরা চেপে ধরেন অ্যাকাউন্ট খুলতে আসা যুবককে। সোমবার বিষয়টি দেখে ব্যাঙ্কের অন্য গ্রাহকেরা প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পরে জানা যায়, অ্যাকাউন্ট খুলতে আসা ওই যুবক আসলে এক জন প্রতারক। তাঁকে ধরতে আসা বাকি দু’জন বালি থানার পুলিশকর্মী।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫৭
Share:

বন্ধ হয়ে যাওয়া অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যাঙ্কে এসেছিলেন বছর পঁচিশের এক যুবক। কিন্তু কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে বলে তাঁকে দাঁড় করিয়ে রাখেন এক ব্যাঙ্ককর্মী। আচমকা ওই যুবকের পিছনে এসে দাঁড়ান আরও দুই যুবক। কিছু পরেই তাঁরা চেপে ধরেন অ্যাকাউন্ট খুলতে আসা যুবককে।

Advertisement

সোমবার বিষয়টি দেখে ব্যাঙ্কের অন্য গ্রাহকেরা প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পরে জানা যায়, অ্যাকাউন্ট খুলতে আসা ওই যুবক আসলে এক জন প্রতারক। তাঁকে ধরতে আসা বাকি দু’জন বালি থানার পুলিশকর্মী। ধৃত যুবকের নাম শিবশঙ্কর পাল।

পুলিশ জানিয়েছে, অগস্টে সোনারপুর থেকে সুবর্ণ হালদার নামে এক ব্যক্তি বালি থানায় ফোন করে জানান, ঋণ পাওয়ার জন্য তিনি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বালি বাজার শাখায় এক যুবকের অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু ঋণ পাননি। যাঁরা ঋণ পাইয়ে দেবেন বলেছিলেন তাঁদেরও সন্ধান নেই। এর পরেই বালি থানার পুলিশ উদ্যোগী হয়ে ওই ওই ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করে অ্যাকাউন্ট নম্বরটির বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করে। ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিচিতি নথি থেকে শিবশঙ্করের পরিচয় জানা যায়। এর পরেই ব্যাঙ্কের সাহায্য নিয়ে শিবশঙ্করকে ধরতে ফাঁদ পাতে পুলিশ। শূন্য ব্যাল্যান্স থাকার কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় শিবশঙ্করের অ্যাকাউন্ট। এ দিন শিবশঙ্কর এক হাজার টাকা জমা রেখে ফের অ্যাকাউন্টটি চালু করার জন্য ব্যাঙ্কে আসেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ব্যাঙ্ককর্মীদের ওই নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর সম্পর্কে আগে থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। শিবশঙ্কর ব্যাঙ্কে আসতেই তাঁকে অপেক্ষা করতে বলে কিছুক্ষণ আটকে রাখেন এক ব্যাঙ্ককর্মী। খবর যায় থানায়। বিকাশ দাস ও শিবদাস বিশ্বাস নামে সাদা পোশাকের দুই পুলিশকর্মী ব্যাঙ্কে পৌঁছে যান। কিছুক্ষণ শিবশঙ্করের উপর নজর রাখার পরে তাঁকে ধরেন ওই দু’জন।

পুলিশ জানায়, শিবশঙ্কর কয়েক বছর ধরেই প্রতারণা চক্রের নামে বহু জালিয়াতি করেছেন। জেরায় পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, সংবাদপত্রে তাঁরা বিজ্ঞাপন দিতেন এক দিনেই ঋণ পাইয়ে দেওয়া হবে। আবেদনকারীদের থেকে কাগজপত্র নিয়ে বালির ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট টাকা জমা দিতে বলা হত। টাকা তুলে নেওয়ার পরে তাঁরা নিজেদের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে ফেলতেন। পুলিশ জানায়, আগেও শিবপুর থানা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনারও বিভিন্ন থানায় শিবশঙ্করের নামে প্রতারণার অভিযোগ ছিল।

হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “ফোনে প্রতারণার খবর পেয়ে বালি থানার পুলিশ নিজেরাই তৎপর হয়ে ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় ওই যুবককে ধরতে ফাঁদ পাতে। শিবশঙ্করকে জেরায় প্রতারণা চক্রের হদিস মেলে।” তিনি আরও জানান, ওই দুই পুলিশকর্মী শিবশঙ্করকে ধরতে যথেষ্ট তৎপরতা দেখিয়েছেন। তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে। প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত বাকিদের খোঁজ চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement