‘অবসরপ্রাপ্ত জুটমিল শ্রমিক মঞ্চ’-র অবস্থান বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
জুটমিল-সহ বিভিন্ন কারখানার অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বকেয়ার দাবিতে মঙ্গলবার চন্দননগরে অবস্থান-বিক্ষোভ করল ‘অবসরপ্রাপ্ত জুটমিল শ্রমিক মঞ্চ’। মহকুমাশাসককে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। ৮টি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা স্ট্র্যান্ডে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে সামিল হন। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি স্তরে শ্রমিকদের বকেয়া আদায়ের ক্ষেত্রে সমস্ত পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু সঠিক ভাবে কাজ হচ্ছে না।
এ দিনের অবস্থান-বিক্ষোভে হুগলি ছাড়াও হাওড়া ও দুই ২৪ পরগনার বহু অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক সামিল হন। তাঁদের তরফে শ্রম দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে অনাদায়ী গ্র্যাচুইটির টাকা মিল-মালিকদের কাছ থেকে আদায়, যে সব মালিক তাঁদের প্রভিডেন্ড ফান্ড এবং গ্র্যাচুইটির টাকা আত্মসাত্ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, স্ত্রীর বিনামূল্যে ইএসআইয়ের সুযোগ-সহ কয়েকটি দাবি তোলা হয়।
রাজ্য শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত বলেন, “রাজ্য সরকার অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের সমস্যার বিষয়ে অবহিত। তা সমাধানের চেষ্টাও চলছে।”
রাজ্যে মোট ৬৩টি জুটমিল রয়েছে। তার মধ্যে বর্তমানে চালু ৫৩টি। কিন্তু অবসর নেওয়ার পরে শ্রমিকদের অনেকেই চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়ছেন। প্রাপ্য পিএফ, গ্র্যাচুইটি বা পেনশন কোনও কিছুই বিধিবদ্ধ নিয়মে পাচ্ছেন না বলে তাঁদের অভিযোগ। একই অভিযোগ কিছু কারখানার অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদেরও। সেই প্রাপ্য আদায়ের জন্যই ওই মঞ্চ গড়ে আন্দোলনে নেমেছেন অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকেরা। এ জন্য তাঁদের কলকাতা হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি মামলায় হাইকোর্ট শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর নির্দেশও দিয়েছে।
ওই মঞ্চ তথা ‘আইনি সহায়তা কেন্দ্র’-এর কর্ণধার বিশ্বজিত্ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা মামলার মাধ্যমে শ্রমিকদের বকেয়া আদায়ের চেষ্টা করছি। অনেকেই টাকা পাচ্ছেন। কিন্তু এমন মানুষও প্রচুর রয়েছেন যাঁরা স্রেফ টাকার অভাবেই বিনা চিকিত্সায় মারা যাচ্ছেন। অসুস্থও রয়েছেন প্রচুর শ্রমিক। তাঁদের কথাও আমাদের ভাবতে হচ্ছে।”