শ্রমিক-কর্তৃপক্ষ দ্বন্দ্ব অব্যাহত, জট কাটছে না ভিক্টোরিয়ায়

এক দিকে কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়ম চালু করতে বদ্ধপরিকর। তার জন্য কোনও শ্রমিকেরই কাজ যাবে না বলে তাঁরা আশ্বস্তও করছেন। কিন্তু শ্রমিকেরা এককাট্টা পুরনো নিয়মে কাজ চালুর দাবিতে। ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া চটকলে এই টানাপড়েন চলছেই। মঙ্গলবারই ফের ওই চটকলের পরিস্থিতি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হল চন্দননগরের মহকুমাশাসকের দফতরে। আর সেই বৈঠকের সময়েই হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে নিজেদের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ওই চটকলের শ্রমিকেরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে সব শ্রমিককে সরিয়ে দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:২৬
Share:

বিক্ষোভে শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার নিজস্ব চিত্র।

এক দিকে কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়ম চালু করতে বদ্ধপরিকর। তার জন্য কোনও শ্রমিকেরই কাজ যাবে না বলে তাঁরা আশ্বস্তও করছেন। কিন্তু শ্রমিকেরা এককাট্টা পুরনো নিয়মে কাজ চালুর দাবিতে। ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া চটকলে এই টানাপড়েন চলছেই।

Advertisement

মঙ্গলবারই ফের ওই চটকলের পরিস্থিতি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হল চন্দননগরের মহকুমাশাসকের দফতরে। আর সেই বৈঠকের সময়েই হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে নিজেদের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ওই চটকলের শ্রমিকেরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে সব শ্রমিককে সরিয়ে দেয়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার থেকে উত্‌পাদন চালু করা হবে বলে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রত্যেক শ্রমিককে কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানানোর জন্যও শ্রমিক সংগঠনগুলিকে বলা হয়। কিন্তু শ্রমিকেরা তাঁদের দাবিতে অনড়। ফলে, আজ থেকে ওই চটকলে আদৌ উত্‌পাদন চালু হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেল।

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বুধবার থেকে চটকলে উত্‌পাদন চালু হবে। আগামী ২৫ জানুয়ারি সব শ্রমিককে এককালীন দু’হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তবে, এখনও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা সরকারের বদনাম করতেই করছেন।” চটকলের সিইও রাজেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, ‘‘উত্‌পাদনের স্বার্থে একটি বিভাগে মেশিনপিছু লোক কমাতেই হবে। তার জন্য কারও কাজ যাওয়ার ভয় নেই। তাঁদের অন্যত্র কাজ দেওয়া হবে।” একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “কিছু শ্রমিকের উস্কানিতে সব শ্রমিক কাজে যোগ দিচ্ছে না। তাতে মিলের উত্‌পাদন ব্যাহত হচ্ছে।” এর পরেও যদি শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দেন তা হলে অন্য চিন্তা-ভাবনা করতে হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

শ্রমিক অসন্তোষের জেরে কিছু দিন ওই চটকলে কাজ বন্ধ থাকার পরে গত ৬ জানুয়ারি থেকে উত্‌পাদন চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে দিন ‘স্পিনিং’ বিভাগে মেশিনপিছু এক জন করে শ্রমিককে কাজ করতে হবে এবং বাকি শ্রমিকদের অন্য বিভাগে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানান। এতে কাজ হারানোর আশঙ্কা করেন শ্রমিকেরা। সে দিন থেকেই তাঁরা কাজে যোগ দিচ্ছেন না। আগে একাধিকবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও কাজ হয়নি।

এ দিনের বৈঠকের পরে চটকলের সিটু নেতা শিবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কর্তৃপক্ষ কী চাইছেন, তা শ্রমিকদের বোঝানো হবে। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোরও আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি, শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেবেন।” কিন্তু আন্দোলনরত শ্রমিকদের পক্ষে ‘তাঁতঘর’ বিভাগের গুরুচরণ দাস বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ যে স্পিনিং বিভাগ বন্ধ করে শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের চক্রান্ত করছেন, এই ঘটনায় তা বোঝা যাচ্ছে। এতদিন শ্রমিকেরা যে ভাবে কাজ করেছেন এখন সে ভাবেই যাতে কাজ করা যায় সে দিকটা দেখতে হবে কর্তৃপক্ষকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন