নেশা ছাড়াতে এক যুবককে কলকাতার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন বাড়ির লোক। অনেকটা সেরেও উঠেছিলেন। কিন্তু আচমকাই চন্দননগরের বাসিন্দা ওই যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দাবি, ওই যুবক গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশায় তাঁর পরিবার। তারা স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে পুলিশ এফআইআর করেছেন। পুলিশ জানায়, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সুরেশ অগ্রবাল (৩২)। বাড়ি চন্দননগরের লক্ষীগঞ্জ বাজার এলাকায়। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরেশ গুটখা এবং মদ্যপানের নেশা করতেন। নেশা ছাড়াতে বাড়ির লোকেরা গত ২৮ অগস্ট কলকাতার কাঁকুরগাছির কাছে ওই বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁকে ভর্তি করান। তাঁদের দাবি, সুরেশ দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার কথাও হচ্ছিল। গত সোমবার দাদা সুনীল ভাইকে দেখতে যান। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফোন করে খবর দেওয়া হয়, সুরেশ অসুস্থ। তাঁরা যেন তাড়াতাড়ি চলে আসেন।
ওই খবর শুনে দুপুরেই সুনীল অন্য আত্মীয়-স্বজন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। স্বাস্থ্যকেন্দ্রর পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়, সুনীল স্নান করতে গিয়ে শৌচাগারে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। সুনীলবাবুরা অবশ্য এত সহজে বিষয়টি মানতে পারছেন না। তাঁদের অভিযোগ, বাড়ির লোককে কিছু না জানিয়ে মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হল কেন? সুনীল বলেন, “সোমবারই তো ভাইকে দিব্যি সুস্থ দেখে গেলাম। এর মধ্যে কি এমন ঘটল? স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ কেনই বা দেহ মর্গে পাঠিয়ে আমাদের খবর দিলেন? স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গাফিলতিতেই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।” সুরেশের দিদি পূজা অগ্রবাল ফুলবাগান থানায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের তরফে কৃষ্ণ মৈত্র অবশ্য বলেন, ‘‘সকালে সুরেশবাবু স্নান করতে গিয়ে বেরচ্ছে না দেখে আমাদের লোকেরা স্নানাগারের দরজায় ধাক্কা মেরে খুলে দেখতে পায় গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশে খবর দিলে তারা এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’’