মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে যথার্থ সাবলম্বী এবং শক্তিশালী করার জন্য এ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহে (ডেটাবেস) জোর দিয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসন। সেখানে গোষ্ঠীগুলির সদস্যাদের সম্পর্কেও যাবতীয় তথ্য থাকবে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর নিযুক্ত লোকজন গ্রামে গ্রামে ঘুরে সেই কাজ শুরুও করে দিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ তারিখের মধ্যে জেলায় ওই তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ করার সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে।
জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের প্রকল্প আধিকারিক স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, “জেলার প্রতিটি গোষ্ঠীর যাবতীয় তথ্যাবলি ছাড়াও গোষ্ঠীগুলির প্রত্যেক সদস্যার আর্থ-সমাজিক তথ্য সংগ্রহ করে তা ওয়েবসাইটে নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এরপর গোষ্ঠীগুলির মূল্যায়ন নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি থাকবে না। কোন গোষ্ঠীর কী ঘাটতি, বা কী রকম সাহায্যের দরকার তা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নজরে থাকবে। গোষ্ঠী উন্নয়নে সেইমতো পদক্ষেপ করা হবে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গরিব মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতিতে বিশেষ জোর দিতে ‘স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্ব-রোজগার প্রকল্পে’র আওতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। গোষ্ঠীগুলির সক্ষমতা বাড়ানো এবং তাদের কাছে ঋণ ও অনুদানের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া ছিল লক্ষ্য। গোষ্ঠীগুলির তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন সম্পদ কর্মীরা। এ ব্যাপারে সাড়া মিললেও গোষ্ঠীগুলির সদস্যদের আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিন্তু তেমন সাফল্য মেলেনি। স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা প্রকল্পটির ত্রুটি-বিচ্যুতি শুধরে পরিবর্তে নতুন ‘জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন’ (এনআরএলএম) প্রকল্পের রাজ্যে আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ২০১২ সালের ১ এপ্রিল। এই প্রকল্পে গোষ্ঠীগুলির উপকারিতা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, গরিব মানুষের সঙ্গে সরাসরি ব্যাঙ্কের যোগসূত্র তৈরি এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ মেনে নিয়েছেন, লক্ষ্যপূরণ করতে অতীতে বিভিন্ন ব্লক এলাকায় নির্ধারিত মূল্যায়ণ প্রক্রিয়ায় দুর্বল স্বনির্ভর দলগুলিকেও উত্তীর্ণ ঘোষণা করে গোষ্ঠীর পরিসংখ্যান বাড়ানো হয়েছে। সরকারি ১০ হাজার টাকা তহবিল হিসাবে গোষ্ঠীগুলি পেয়েছে। সেই টাকার অধিকাংশই অপচয় হয়েছে। অধিকাংশ স্বনির্ভর গোষ্ঠী শুধুমাত্র সঞ্চয়কারী গোষ্ঠীতেই অবস্থান করছে। প্রকৃতপক্ষে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেনি।