উধাও গয়না। —নিজস্ব চিত্র।
‘এটা কি আপনাদের? আমার বাড়ির দরজার সামনে পড়ে ছিল!’
প্রতিবেশীর হাতে সোনার দুলটি দেখে চমকে ওঠেন দম্পতি। ভাবছিলেন আলমারির লকারে থাকা ওই গয়না কী করে প্রতিবেশীর দরজার সামনে গেল? চাবি দিয়ে বাড়ির দু’টি আলমারির লকার খুলে তাজ্জব হওয়ার পালা। পড়ে রয়েছে গয়নার খালি বাক্স, নগদ টাকাও উধাও!
দরজার তালা না ভেঙে, আলমারি অক্ষত রেখে, সমস্ত চাবি যথাস্থানে রেখে অভিনব এই চুরি হয়েছে হাওড়ার পি কে ব্যানার্জি রোডে। যা নিয়ে ধন্দে পুলিশও। প্রতিবেশী এক পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন জগদীশ ও কুসুম চন্দাক নামে ওই দম্পতি।
পুলিশ জানায়, পিকে ব্যানার্জি রোডের একটি চারতলা আবাসনের বাসিন্দা চন্দাক পরিবার। বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রতিবেশী সুরেশ চৌধুরীর হাতে দুলটি দেখে তাঁরা জানতে চান, তিনি কোথায় দুলটি পেলেন। সুরেশবাবু জানান, তাঁর বাড়ির দরজার সামনে সেটি পড়ে ছিল। আবাসনের অন্যরা সেটি তাঁদের নয় জানালে তিনি জগদীশের বাড়িতে আসেন। পুলিশ জানায়, লকার খুলে আরও চমকে যান জগদীশবাবুরা। দেখেন গয়নার বাক্সগুলি ফাঁকা। অন্য ঘরের আলমারির লকারেও মানিব্যাগে রাখা প্রায় আট হাজার টাকা উধাও। তবে আর কিছুই লণ্ডভণ্ড হয়নি।
শুক্রবার পুলিশের কাছে লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না ও নগদ টাকা উধাও হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন জগদীশবাবু। জানান, ২৫ নভেম্বর তিনি অফিসে থাকাকালীন আত্মীয়দের সঙ্গে বেড়াতে যান কুসুমদেবী। তখনই চুরি হয় বলে মনে করেন তাঁরা। কুসুমদেবী বলেন, “ফ্ল্যাটের চাবি পাশের বাড়ির এক জনের কাছে রেখে যাই। বেশ কয়েক বছর ধরে ওঁর কাছেই চাবি রেখে বাইরে যাই। কোথাও কিছু ভাঙা না থাকায় বুঝতে পারিনি।” ওই প্রতিবেশীর নামেও অভিযোগ করেছেন জগদীশবাবু। তবে প্রতিবেশী ওই মহিলার দাবি, “১৬ বছর ধরে ওঁরা আমাদের কাছে চাবি রাখছেন। চাবি রেখে দেশেও যান। এত দিন কিছু হল না। কী ভাবে চুরি হল, তা জানব কী করে? পুলিশ তদন্ত করুক।”
পুলিশ জানায়, জগদীশবাবুর ফ্ল্যাটের ভিতরে একটি ছোট মন্দিরে লকারের চাবি থাকত। পুলিশের অনুমান, অতি পরিচিত কেউই এতে জড়িত এবং ঘটনার মোড় ঘোরাতেই একটি দুল সুরেশবাবুর বাড়ির সামনে ফেলে রাখা হয়।