রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তিনি। কিন্তু রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী নিজে মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় তিনি কার্যত ‘নখদন্তহীন বাঘ’!
সোমবার বণিকসভা ভারত চেম্বার অব কমার্সের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজ্যপাল। সেখানে প্রশ্ন ওঠে, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা কোন দিকে এগোচ্ছে? আচার্য হিসেবে রাজ্যপাল বিষয়টিকে কী ভাবে দেখছেন?
জবাবে খানিকটা সাবধানি সুর শোনা গেল ত্রিপাঠীর গলায়। প্রথমে তিনি বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কথা বললে বিতর্ক তৈরি হতে পারে!’’ তার পরে আইনের নিরিখে ভিন্ রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের আচার্যের ক্ষমতার ফারাক বোঝাতে ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘কোহি শের হো, উসকি নাখুন না হো!’’ অর্থাৎ ‘নখদন্তহীন বাঘ’।
আচার্য কেন এমন মন্তব্য করলেন, তা নিয়ে ত্রিপাঠীর সঙ্গে কথা বলতে চান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কীসের প্রেক্ষিতে আচার্য এই ধরনের মন্তব্য করলেন, মঙ্গলবার রাজভবনে গিয়ে তা নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলব।’’
উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের শিক্ষা ব্যবস্থায় আচার্যেরা কতটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এ দিনের সভায় তা বোঝাতে আইনমাফিক তাঁদের ক্ষমতার প্রসঙ্গ টানেন ত্রিপাঠী। বলেন, ‘‘বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য গড়া সার্চ কমিটিতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে এক জন সদস্য নিয়োগ করতে পারেন রাজ্যপাল। তার বাইরে কিছু নেই।’’ তার পরে প্রশ্নকর্তার উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার (ত্রিপাঠী) মাত্র সাড়ে তিন বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল হয়ে এসেছেন। শিক্ষা নিয়ে যে-প্রশ্ন করা হচ্ছে, সেই বিষয়ে প্রশ্নকর্তারই তো তাঁর থেকে ভাল জানার কথা! তা-ই নয় কি?
ইদানীং বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কোনও সংঘাতে যাননি রাজ্যপাল। বরং শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন বলে রাজভবনের খবর। তবু এ দিন তাঁর বক্তব্যে এমন সুর বাজল কেন, তা নিয়ে চর্চা চলছে শিক্ষা শিবিরে।