ছবিতে অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —গ্রাফিক সনৎ সিংহ।
মঙ্গলবার বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক। তার পরে বুধবার রাজ্যের পাওনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগে সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ মন্তব্য করলেন তৃণমূলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা সোমবার স্পষ্ট করে দেন, মোদী ও অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর কোনও ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’ নেই। তবে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ‘মতাদর্শগত সমস্যা’ রয়েছে। মমতার কথায়, ‘‘বিজেপির পুরনো দিনের নেতারা সব কোথায় গেলেন? কেন তাঁরা আস্তে আস্তে ঘরে ঢুকে যাচ্ছেন?’’
অতীতেও মমতা একাধিকবার বলেছেন, অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিজেপি এবং মোদী-শাহের বিজেপি এক নয়। উল্লেখ্য, বাজপেয়ী জমানায় কেন্দ্রে এনডিএ সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন মমতা। বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আডবাণীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কও জাতীয় রাজনীতিতে সুবিদিত। বাজপেয়ী তো মমতার কালীঘাটের বাড়িতেও এসেছিলেন। আডবাণীর পরিবারের সঙ্গেও গভীর ব্যক্তিগত সখ্য ছিল মমতার। অনেকের মতে, মোদী-শাহ যে ‘আগ্রাসী’ ভঙ্গিতে দল এবং সরকার চালাচ্ছেন, মমতা তারই সমালোচনা করতে চেয়েছেন।
মোদী-শাহকে নিয়ে মমতার সমালোচনা অবশ্য নতুন নয়। সম্প্রতি মোদী-শাহের নামোল্লেখ না করেও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। নভেম্বরে দলের বিশেষ অধিবেশন থেকে তৃণমূলনেত্রী আরএসএসের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘আপনারা ধর্ম করুন, আমার কোনও আপত্তি নেই। আমার আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও কিছু বলার নেই। কিন্তু দেশের জন্য যে লোক দু’টো সবচেয়ে ক্ষতিকারক, তাঁদের আর সাপোর্ট দেবেন না।” অনেকের মতে নাম না করলেও মমতা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি কাদের কথা বলছেন।
মমতার এই দিল্লি সফরের দু’টি দিক রয়েছে। এক, লোকসভার লক্ষ্যে বিজেপি বিরোধী জোটকে আরও সঙ্ঘবদ্ধ করা। এবং দুই, রাজ্যের পাওনা আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক। সেই প্রেক্ষাপটে মমতা বুঝিয়ে দিলেন, প্রধানমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত সমস্যা নেই। সবটাই ‘রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত’।