আক্রান্ত গৃহবধূ সুমিতা দাস। — নিজস্ব চিত্র
দাবি মতো কালীপুজোর চাঁদা দেননি। তাই বাড়িতে চড়াও হয়ে এক রেলকর্মীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ির একটি ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে প্রধাননগর থানার পঞ্চানন কলোনিতে ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় রেল আবাসনে স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে থাকেন কৃষ্ণকুমার দাস নামে রেলের ফুড এবং স্যানিটারি বিভাগের সুপারভাইজার। অভিযোগ, এলাকার যুব সংঘ স্টার ক্লাবের ৪/৫ জন সদস্য এ দিন রাতে কৃষ্ণবাবুর বাড়িতে গিয়ে ৩০০ টাকা চাঁদা চায়। তিনি ১৫০ টাকা দেবেন বলায় রেগে গিয়েছিলেন ওই সদস্যরা। এর পরেই গোলমালের সূত্রপাত। কৃষ্ণবাবুর উপর চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে তারা। মারধর করা হয় তাঁর স্ত্রী সুমিতাদেবীকেও।
রেলের ওই কর্মীর অভিযোগ, ‘‘এত টাকা দিতে পারব না বলায় ওরা গালিগালাজ শুরু করে। আমাকে কলার ধরে টেনে বাইরে নিয়ে আসে। ওদের সঙ্গে যোগ দেয় ক্লাবের অন্য সদস্যরাও। রড ও বাটাম দিয়ে মারধর করা হয় আমাকে। আমার স্ত্রী ও ছেলে বাধা দিলে তাদেরও মারধর করা হয়। স্ত্রীকে এনজেপি হাসপাতালে নেওয়ার পথে অজ্ঞান হয়ে যান।’’
আরও দেখুন
ক্লাবের তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের পাল্টা দাবি, চাঁদা নিয়ে মারধরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। শুধুমাত্র বচসা হয়েছে। কৃষ্ণবাবুর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি বাইক থেকে পড়ে আহত হন। কৃষ্ণবাবুর পরিচিত কিছু লোকজন পুজো মণ্ডপে হামলা চালান বলেও অভিযোগ করেছে তারা।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘দুই তরফে অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। তবে চাঁদা আদায়ের নামে কোনও জুলুম বরদাস্ত করা হবে না।’’
ঘটনায় নাম জড়িয়েছে যুব সংঘ স্টার ক্লাবের কর্মকর্তা তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা নরসিংহ মাহাতোর। তিনি বলেন, ‘‘ক্লাবের কিছু ছেলে চাঁদা চাইতে গিয়েছিলেন। কৃষ্ণবাবু সেই সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। ওঁর স্ত্রী ৫১ টাকা দেবেন বলেন।
এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় মাত্র। ছেলেরা ফিরেও আসে। পরে ওরা প্যান্ডেলে হামলা করেছে। মেয়েদেরও মারা হয়েছে।’’
তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি থানাতেই ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছিলেন। থানার সিসিটিভি ফুটেজে তা থাকবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। যদিও কেউ মদ্যপ ছিল না এবং কাউকে মারধর করা হয়নি বলে দাবি করেছেন কৃষ্ণবাবু।