হাসপাতালেই প্রসবের প্রচারে নামছেন ইমামরা

সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় ধাইয়ের হাতে প্রসূতিকে ছেড়ে দেবেন না, হাসপাতালে নিয়ে যান। মালদহে ইমামরা এই প্রচার শুরু করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৮
Share:

সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় ধাইয়ের হাতে প্রসূতিকে ছেড়ে দেবেন না, হাসপাতালে নিয়ে যান। মালদহে ইমামরা এই প্রচার শুরু করেছেন।

Advertisement

বাল্যবিবাহ রোধ করতে মালদহেই পুরোহিতেরা শপথ নিয়েছিলেন এ বছরই। তাতে লাভও হয়েছে। মুর্শিদাবাদেও পুরোহিতেরা নাবালিকা বিয়ে রোধে উদ্যোগী হয়েছেন। প্রচারে নেমেছিলেন ইমামরাও।

সমাজে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রভাব এই ভাবে কাজে লাগিয়ে এর আগেও ভাল ফল পাওয়া গিয়েছে। যেমন, নদিয়ার তেহট্টে ইমামরা বার্ড ফ্লু-র সময় প্রচার করেছিলেন মরা ও অসুস্থ মুরগি খাবেন না। মসজিদের মাইক থেকে তা প্রচার করা হয়। ২০১২ সালে তাতে বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা মিলেছিল। এ বছরই মুর্শিদাবাদের ডোমকল ও হরিহরপাড়ায় ইমামরা ডেঙ্গি নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করেছেন। পালস পোলিও খাওয়ার জন্যও প্রচার করেছেন তাঁরা। মালদহের এক প্রশাসনিক অধিকর্তার কথায়, সরকারি ভাবে প্রচার তো করাই হয়। তবে পুরোহিত বা ইমামদের কথায় অনেকেই খুব বিশ্বাস করেন। তাঁরাও এই ভাবে সামাজিক সচেতনতা প্রসারে এগিয়ে আসতে আগ্রহী।

Advertisement

তা থেকেই উৎসাহিত হয়ে মালদহ জেলা প্রশাসন সদ্যোজাত ও প্রসূতি মৃত্যুর হার কমাতে ইমামদের দ্বারস্থ হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা সদরের সানাউল্লা মঞ্চে প্রায় তিনশো ইমামকে নিয়ে একটি সচেতনতা কর্মশালাও করা হয়। জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদীর বক্তব্য, ইমামরা সমাজের গণ্যমান্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁদের কথা মানুষ শোনেন। তিনি বলেন, ‘‘বাল্যবিবাহ রোধের কাজে ইমামদের সাহায্য নিয়ে সাফল্য মিলেছে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বাড়াতেও তাঁদের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।’’

মালদহে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়েছে। চাঁচলে মহকুমা হাসপাতালও রয়েছে। জেলায় আরও ১৬টি গ্রামীণ হাসপাতাল ও ৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও প্রসবের ব্যবস্থা রয়েছে। তবু রাজ্যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার যেখানে প্রায় ৯০ শতাংশ, সেখানে ৩১ মার্চ পর্যন্ত মালদহে তা ৬৫.৫ শতাংশ। সম্প্রতি একটু বেড়ে ৭৩.২ শতাংশ হয়েছে। ১৫টি ব্লকের মধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুর ২, চাঁচল ২, রতুয়া ১, মানিকচক ব্লকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হারের চিত্র খুবই খারাপ। ওই ব্লকগুলিতে বাড়িতে প্রসবের হার ৫০ শতাংশেরও বেশি। প্রসূতি ও শিশুমৃত্যুর হারও এ সব এলাকায় বেশি।

এই অভিশাপ কাটাতেই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাহায্য চাইছে প্রশাসন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপকুমার মণ্ডল জানান, জেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ইমাম রয়েছেন। প্রতি শুক্রবার নমাজ পাঠের পর তাঁরা যদি প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের সুফলের কথা প্রচার করেন, তা হলে বাড়িতে প্রসবের হার অবশ্যই কমবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement