India-China

চাকরি পেলেও পড়া চালিয়ে যাবেন শকুন্তলা

ঝাড়খণ্ডের রানিশ্বরের ময়ূরাক্ষী গ্রামীণ কলেজের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন শকুন্তলা। তাঁর পড়াশোনার ভার ছিল দাদা রাজেশের উপরেই। পড়াশোনা করতে করতেই শকুন্তলা চাকুরি করতে চান।

Advertisement

শুভদীপ পাল

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২০ ০৪:৩৯
Share:

আশ্বাস: নিহত জওয়ান রাজেশ ওরাংয়ের পরিজনের সঙ্গে কথা বলছেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

খুব কষ্টে চলত সংসার। দাদা সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পরে ধীরে ধীরে সংসারের হাল ফিরছিল। মাটির বাড়ি হয়েছিল পাকা। দাদা রাজেশ ওরাং লাদাখে চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন। দাদার অবর্তমানে তাই পরিবারের হাল ধরতে চাইছেন রাজেশের ছোট বোন শকুন্তলা।

Advertisement

ঝাড়খণ্ডের রানিশ্বরের ময়ূরাক্ষী গ্রামীণ কলেজের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন শকুন্তলা। তাঁর পড়াশোনার ভার ছিল দাদা রাজেশের উপরেই। পড়াশোনা করতে করতেই শকুন্তলা চাকুরি করতে চান। বৃহস্পতিবার মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়া গ্রামের বাড়িতে বসে বললেন, ‘‘সরকার থেকে চাকরি দিলে আমি করব। এত দিন মাথার উপরে দাদা ছিল। কিন্তু এখন পরিবারের হাল আমাকেই ধরতে হবে।’’

সোমবার রাতে লাদাখে প্রাণ গিয়েছে রাজেশ-সহ এই রাজ্যের দু’জনের। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে এবং পরিবারের এক জন সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। সেই মতো এ দিন সকালে কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় রাজেশের বাড়ি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কথা পরিবারের সদস্যদের জানান।

Advertisement

পরিবার সূত্রে খবর, সামাজিক কাজকর্ম শেষ হওয়ার পর মন্ত্রী আশিসবাবু নিহতের জেঠতুতো ভাই অভিজিৎ ওরাং-কে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। তিনি পুরো বিষয়টি ব্যক্তিগত ভাবে দেখে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আশিসবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যা করার করবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও এই পরিবারের পাশে থাকা হবে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী চাকরি এবং পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। তাছাড়া শকুন্তলার লেখাপড়ায় যেন সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টিও দেখব।’’

নিহত জাওয়ানের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, রাজেশের বাবা শারীরিক অসুস্থার জন্য কোনও কাজ করতে পারেন না। একমাত্র রোজগেরে ছিলেন রাজেশ। তাঁর মৃত্যুর পরে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবার। তাই সরকার থেকে চাকরি দেওয়া হলে খুব সুবিধা হয়—জানিয়েছেন শকুন্তলা। তাঁর কথায়, ‘‘চাকরির বিষয়ে এখনও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করেননি। আমরা সংবাদমাধ্যমের দ্বারা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কথা জানতে পেরেছি।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজেশের পরিবারের হাতে পাঁচ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া এবং পরিবারের সদস্যদের কাছে থেকে চাকরির আবেদনপত্র সংগ্রহ করার জন্য নবান্ন থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশিকা এসেছে। সেই মতো জেলা প্রশাসনের কর্তারা প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন