মৃত্যু গুলিবিদ্ধ ব্লক সভাপতির, চাপানউতোর খয়রাশোলে

লড়াই শেষ। মারা গেলেন আততায়ীর গুলিতে জখম খয়রাশোল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দীপক ঘোষ। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয় আজ দুপুরে ১টা নাগাদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খয়রাশোল শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০২
Share:

হাহাকার: তৃণমূল নেতা দীপক ঘোষের মৃত্যুর খবরে শোকগ্রস্ত পরিবার। সোমবার দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে। ছবি: বিকাশ মশান

লড়াই শেষ। মারা গেলেন আততায়ীর গুলিতে জখম খয়রাশোল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দীপক ঘোষ। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয় আজ দুপুরে ১টা নাগাদ।

Advertisement

রবিবার দুপরে খয়রাশোলের কেন্দ্রগড়িয়ায় গ্রামের বাড়ি থেকে হিংলো নদী পেরিয়ে খয়রাশোল সদরে ফেরার পথে অজ্ঞাতপরিচয় মোটরবাইক আরোহী দুষ্কতীদের হামলার শিকার হন দীপকবাবু। হেলমেটে মাথায় ঢেকে রাখা আততায়ীরা প্রথমে গুলি চালায়। দীপকবাবু বাইক থেকে পড়ে গেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর শরীরে পরপর কোপ মারা হয়। দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরেও বাঁচানো গেল না বছর পঁয়তাল্লিশের ওই নেতাকে। এই নিয়ে তিন ব্লক সভাপতি খুন হলেন বীরভূমের ওই তল্লাটে। পাঁচ বছর আগে গুলি করে মারা হয়েছিল দীপকবাবুর দাদা, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অশোক ঘোষকে। পরের বছরই খুন হন আর এক প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায়।

শাসক দলের বর্তমান দাপুটে ব্লক সভাপতির উপরে হামলার ঘটনার জেরে বীরভূমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তপ্ত হয়ে উঠলেও কে বা কারা ওই ঘটনা ঘটাল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করলেও সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ হয়নি। নিহতের পরিবার সূত্রে বলা হয়েছে, জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পরে অভিযোগ করা হবে। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল আগরওয়াল জানিয়েছেন, ৭ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনাচক্রে এ দিনই লাভপুরে এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে ঘিরে বিজেপি-তৃণমূল চাপানউতোর
শুরু হয়েছে।

Advertisement

দীপকবাবুর খুনের ঘটনায় অনুব্রতের দাবি, ‘‘এটা বিজেপির ষড়যন্ত্র। ওরাই খুন করিয়েছে। পুলিশ কয়েক জনকে ধরেছে শুনেছি।’’ যা শুনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সবার আগে অনুব্রতকেই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। ওদের নিজেদের গণ্ডগোলে খুন বলে তৃণমূল কিছুই করবে না। স্রেফ বিবৃতি দিয়েই কাজ সারবে।’’ দলের জেলার সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গায়ের জোরে আমাদের কাউকে ফাঁসালে, সেটা অন্য প্রশ্ন। কিন্তু প্রকৃত তদন্তে হলে তৃণমূলের লোকেরাই ধরা পড়বে।’’

এ দিন হাসপাতালে এসেছিলেন নিহতের স্ত্রী মিঠু ঘোষ, ছেলে কৌশিক, দিদি মিলন, বৌদি বিজয়া, ভাইপো বিশ্বজিৎ এবং ভাইঝি সোমা। বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘ওই হামলার পরে অনেকবার কাকাকে সতর্ক হয়ে যাতায়াত করতে বলেছি। কিন্তু কাকা কথা শোনেননি।’’ অনুব্রতের কথায়, ‘‘দীপকের এ ভাবে চলে যাওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি দেহ দেখতে পারব না। তাই বিকাশদা, নরেশকে (জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী ও এলাকার বিধায়ক নরেশ বাউড়ি) এলাকায় পাঠিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন