জখম আইনজীবীর মৃত্যু

ট্রমা-য় চালু নেই আইসিইউ

ট্রমা ইউনিট চালু হয়েছে প্রচার করছে স্বাস্থ্য দফতর। আর এতেই বিভ্রান্তি বাড়ছে মানুষের মনে। দুর্ঘটনায় আহতদের ক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। ফলে ট্রমা ইউনিটে গুরুতর জখমকে নিয়ে গিয়ে বিপদ আরও বাড়ছে। কারণ, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সময়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৮ ০১:২৮
Share:

বছর দেড়েক আগে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে চালু হয়েছে ট্রমা কেয়ার ইউনিট। সেই ভরসায় পথ দুর্ঘটনায় জখম এক আইনজীবীকে বুধবার সন্ধ্যায় ওই ট্রমা ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অবশ্য সেখানে যাওয়ার পরেই কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, ট্রমা ইউনিটে শুধুমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা সম্ভব। অগত্যা ১৮ কিলোমিটার দূরের নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয় ওই আইনজীবীকে। সেখানে পৌঁছনোর পরই মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement

ট্রমা ইউনিট চালু হয়েছে প্রচার করছে স্বাস্থ্য দফতর। আর এতেই বিভ্রান্তি বাড়ছে মানুষের মনে। দুর্ঘটনায় আহতদের ক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। ফলে ট্রমা ইউনিটে গুরুতর জখমকে নিয়ে গিয়ে বিপদ আরও বাড়ছে। কারণ, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সময়। ওই আইনজীবীর পরিচিত খড়্গপুরের গ্রামীণ থানার এক মুহুরি সোমনাথ আচার্য বলেন, “আমরা কয়েকজন মিলে গৌতমদাকে নিয়ে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ, আমরা জানতাম ওখানে ট্রমা ইউনিট চালু রয়েছে। কিন্তু ওখানে পৌঁছে ভুল ভাঙে। চিকিৎসক পরিকাঠামোর অভাব জানিয়ে মেদিনীপুরে রেফার করেন। কিন্তু এত টানাহ্যাঁচড়া করার জন্য আমরা গৌতমদাকে বাঁচাতে পারলাম না। এ ভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অর্থ কী!”

বুধবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর জেলা আদালত থেকে মোটর সাইকেলে খড়্গপুরের ইন্দায় বাড়ি ফিরছিলেন আইনজীবী গৌতম দে (৪৩)। সেই সময় বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকের কাছে একটি ট্রাক তাঁকে ধাক্কা দেয়। গুরুতর জখম ওই আইনজীবীকে নিয়ে তাঁর পরিচিতেরা খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ট্রমা ইউনিটে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে পরিকাঠামোর অভাব দেখিয়ে তাঁকে মেদিনীপুরে রেফার করে দেন। মেদিনীপুরে নিয়ে গিয়েও শেষরক্ষা হয়নি।

Advertisement

হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “সে দিন আইসিইউ চালু থাকলে ওই আইনজীবীকে রেফার করতে হতো না। এখন চিকিৎসক কম থাকলেও আইসিইউ চালু থাকলে আমরা ট্রমার চিকিৎসা চালাতে পারব। স্বাস্থ্যভবনে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে সম্প্রতি। তাতে ঠিক হয়েছে আমাদের জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার দেওয়া হবে। তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আইসিইউ চালু করব আমরা।”

গত ২০১৬ সালের জুনে পুরোদমে চালু করা হয় ট্রমা কেয়ার ইউনিট। কিন্তু তারপর এতদিন কেটে গেলেও এখনও ট্রমায় উপযুক্ত চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, হাসপাতাল ও ট্রমা ইউনিট মিলিয়ে রয়েছেন ৪ জন সার্জেন। কিন্তু অস্থি বিভাগে সার্জেন নেই ট্রমা ইউনিটে। আপাতত হাসপাতালের অস্থি বিভাগের ২ জন সার্জেন দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। এছাড়াও নেই জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার ও নার্স। ফলে সরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও আইসিইউ চালু করা যাচ্ছে না। তাই জখমদের রেফার করছেন সার্জেনরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement