প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষাকর্মী নিয়োগে আরও সাবধানী স্কুলশিক্ষা দফতর। এ বার নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা হয়ে গেলেও ফের শূন্যপদের তালিকা খতিয়ে দেখার জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর।
দফতরের এক কর্তা জানান, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের সময় বহু প্রার্থী অভিযোগ করেছিলেন সংরক্ষণ (তফসিলি জাতি, উপজাতি, অনগ্রসর শ্রেণি) না মেনেই মেধা তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ফলে বঞ্চিত হয়েছেন বহু সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী। এর প্রতিবাদে সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ অফিসের সামনে একাধিক বার বিক্ষোভও হয়েছে। এই কারণেই এ বার উচ্চ প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাকর্মী নিয়োগে বিতর্ক এড়াতে সাবধানী হয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর।
এক কর্তা জানান, নিয়ম অনুযায়ী স্কুল থেকে শিক্ষাকর্মীর শূন্যপদের তালিকা জেলা স্কুলপরিদর্শকের অফিসে পাঠানো হয়। সেই তালিকা খতিয়ে দেখে ছাড়পত্র দেন পরিদর্শক। এর পর তালিকা পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট স্কুল এবং বিকাশ ভবনে স্কুলশিক্ষা দফতরে। ওই তালিকার ওপর নির্ভর করেই স্কুল সার্ভিস কমিশন শূন্যপদ পূরণ করে। এ বার বিকাশ ভবনের পাঠানো শূন্যপদের তালিকা হাতে পেয়ে লিখিত পরীক্ষা নিয়েছে কমিশন। তবু বাড়তি সতর্কতা হিসাবে শূন্যপদের তালিকা আরও এক বার খতিয়ে দেখার জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশ দিয়েছে দফতর।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানান, শিক্ষাকর্মী বলতে সাধারণত গ্রুপ ‘সি’ এবং গ্রুপ ‘ডি’ ক্যাটাগরিকেই বোঝায়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী এই দুই ক্যাটাগরিতেই সমস্ত পদ আসা উচিত। তাঁর কথায়, ‘‘প্রয়োজন হলে এমন অনেক পদ তৈরি হতে পারে যাঁরা গ্রুপ ‘সি’ এবং ‘ডি’-র জন্য বরাদ্দ উভয় কাজই করতে পারবেন।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রাথমিকের মেধা তালিকায় সংরক্ষণ নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠার পরেই এ বার দফতরের টনক নড়েছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কি শিক্ষাকর্মীদের শূন্যপদের তালিকা তৈরির সময় কোনও ভুল থেকে গিয়েছে?’’ এক জেলা স্কুল পরিদর্শক অবশ্য জানান, পুরো প্রক্রিয়ায় যেন কোনও ফাঁক না থাকে, সেই কারণে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে।