গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তাল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

দিন কয়েক ধরেই উত্তেজনা ছিল। সোমবার দুপুরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর তাণ্ডবে উত্তাল হয়ে উঠল মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। দফায় দফায় ইট, পাথর নিয়ে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এক ছাত্রী সহ মোট ছ’জন জখম হয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:২৪
Share:

বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই ছড়াল ছাত্র সংঘর্ষের উত্তেজনা। সোমবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

দিন কয়েক ধরেই উত্তেজনা ছিল। সোমবার দুপুরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর তাণ্ডবে উত্তাল হয়ে উঠল মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। দফায় দফায় ইট, পাথর নিয়ে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এক ছাত্রী সহ মোট ছ’জন জখম হয়েছেন। একদল ছাত্রছাত্রী জাতীয় সড়ক অবরোধও করে। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।

Advertisement

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বারের মতো ছাত্র সংসদের নির্বাচন জানুয়ারিতে হওয়ার কথা। বেশ কয়েক বছর ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। নেতৃত্বে রয়েছেন ইংরেজবাজারের প্রাক্তন পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি তথা কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ দাস ও তাঁর অনুগামীরা। কিন্তু কৃষ্ণেন্দুবাবু পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার পরেই তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের ঘনিষ্ঠ বিশ্বজিৎ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে তৃণমূল সূত্রেই খবর। এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই এ দিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। অনেক ছাত্রছাত্রীই বাড়ি চলে যান।

দিন কয়েক ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বজিৎবাবুর অনুগামী বহিরাগতদের দেখা যাচ্ছিল। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ তৃণমূলের বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকে ছাত্র সংসদের ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি আক্রাম হোসেনের নেতৃত্বে তাঁদের একদল কর্মী সমর্থক সহকারী রেজিস্ট্রার অরিজিৎ দাসের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এর পরে ফের একদল বহিরাগত বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে হামলা চালায়। তারপরেই দু’পক্ষের মধ্যে ইট, পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয়ে যায়। জখম হন প্রসেনজিৎ গোষ্ঠীর বর্ণা বসাক নামে এক ছাত্রী সহ মোট ছ’জন। খানিক পরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে শুয়ে পড়েন আক্রাম ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থক।

Advertisement

বিশ্বজিৎবাবুর অভিযোগ, ‘‘আক্রাম ও তাঁর অনুগামীরা দুর্নীতিগ্রস্ত। তার প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রকে মারধর করে তাঁরাই ভাঙচুর করেছেন।’’ আক্রামের পাল্টা দাবি, বহিরাগতেরা এদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের মারধর ও ভাঙচুর করেছে।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনায় জেলাশাসক ও উপাচার্যের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এমন ঘটনা আমরা বরদাস্ত করি না। করবও না।’’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি জয়া দত্তও বলেন, ‘‘শুনেছি বহিরাগতেরা আমাদের ছেলে মেয়েদের মারধর করেছে।’’ এই ঘটনায় কৃষ্ণেন্দুবাবু মন্তব্য করতে চাননি। মোয়াজ্জেম দাবি করেছেন, ঘটনায় তাঁদের দলের কেউ জড়িত নন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন