ছাত্র খুনের মামলায় যুক্ত নতুন ১০টি ধারা

সবং কলেজে ছাত্র খুনের ঘটনায় ধৃত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) তিন কর্মীর জামিনের জন্য ফের আবেদন জানানো হল। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক আশুতোষ করের এজলাসে ওই জামিনের আবেদন জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৫ ০০:২৯
Share:

সবং কলেজে ছাত্র খুনের ঘটনায় ধৃত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) তিন কর্মীর জামিনের জন্য ফের আবেদন জানানো হল। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক আশুতোষ করের এজলাসে ওই জামিনের আবেদন জানানো হয়েছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর তার শুনানি হবে। এ দিকে, খুনের এই মামলায় আরও ১০টি ধারা যুক্ত করেছে পুলিশ। পুলিশের এক সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ধারাগুলো যুক্ত করতে চেয়ে মেদিনীপুরের সিজেএম মঞ্জুশ্রী মণ্ডলের এজলাসে আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।

Advertisement

গোড়ায় খুন-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির দু’টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল। এ বার সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট, ভীতি প্রদর্শন, মারধর, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ আরও ১০টি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এই ১২টি ধারাতেই মামলা চলবে খুনের ঘটনায় ধৃত পাঁচ জনের (টিএমসিপি-র তিন জন এবং ছাত্র পরিষদের দু’জন) বিরুদ্ধে। মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে সরকারপক্ষের আইনজীবী দীপক সাহা বলেন, “দিন কয়েক আগে নতুন করে কয়েকটি ধারা যুক্ত হয়েছে।’’

পুলিশের এই একাধিক ধারা যোগ নিয়েও অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। ধৃত ছাত্র পরিষদ (সিপি) কর্মী পল্টু ওঝার আইনজীবী হরিসাধন ভট্টাচার্য বলেন, “পুলিশ নিজের মতো করে মামলাটি সাজাতে চাইছে। যে ভাবে সংযুক্ত হিসেবে এফআইআর কপিতে আরও ১০টি ধারার উল্লেখ করা হয়েছে, তা অনুচিত। পুলিশ মামলায় নতুন ধারা যুক্ত করতেই পারে। কিন্তু কেন তা কালি দিয়ে এফআইআর কপিতে উল্লেখ করবে?’’ একই মত ধৃত পল্টুর আর এক আইনজীবী শান্তি দত্তের। সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার মতে, “এই জেলার পুলিশ লক্ষ্মণরেখা ছাড়িয়ে গিয়েছে। আইনি লড়াই করেই ওদের (ধৃত সিপি কর্মীদের) বের করে আনব।’’ কৃষ্ণপ্রসাদ জানাকে খুনের মুহূর্তের ফুটেজ প্রকাশ্যে আনার দাবিও জানান মানসবাবু। তাঁর কথায়, “যারা যারা মারছে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক।’’ ধৃত টিএমসিপি কর্মীদের আইনজীবী তথা মেদিনীপুরের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর মৃণাল চৌধুরী অবশ্য বলেন, “পুলিশ নতুন করে এই মামলায় কয়েকটি ধারা যুক্ত করেছে। এ নিয়ে কিছু বলার নেই।’’

Advertisement

আইনজীবীদের একাংশের ধারণা, মামলায় এই ধারাগুলো যুক্ত না করলে পরবর্তী সময়ে পুলিশ সমস্যায় পড়ত। কারণ, ঘটনায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের সকলকে সরাসরি খুনে জড়িত হিসেবে প্রমাণ করার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারত। এ দিন আবার টিএমসিপি-র তিন কর্মীর জামিনের আবেদন জানানো হয়। শেখ মুন্নাদের আইনজীবী গৌতম মল্লিক বলেন, “আমার মক্কেলরা নির্দোষ। সিসিটিভি ফুজেট সিজ হয়েছে। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা নিরপেক্ষ। কয়েকজন শিক্ষক- শিক্ষাকর্মী গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। কোর্ট দেখতে পারে।’’ গৌতমবাবু তৃণমূল লিগ্যাল সেলের জেলা সভাপতি।

বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর আদালতে অন্য এক মামলায় হাজিরা দিতে এসেছিলেন গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “সবংয়ের আসল ঘটনা চাপা দিতে মুখ্যমন্ত্রীর কথাকে মান্যতা দিতে পুলিশ সুপার মহাশয়া যাই করুন, মানুষ দেখেছে প্রকৃত ঘটনা কী। সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল তাকে উড়িয়ে দিয়ে আমি আমার মতো করে ঘটনা তৈরি করে দেবো, এটা হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন