মুকুল-মির্জায় হোঁচট তদন্তে

মুকুলের দাবি, ভাড়ায় নেওয়া ওই ফ্ল্যাট এখন ছেড়ে দিয়েছেন। আর মির্জা বর্ধমান থেকে বদলি হয়ে ব্যারাকপুরে।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

যে রকম ভাবে ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল ধাপে ধাপে স্টিং অপারেশন করেছিলেন, তেমনই ধাপে ধাপে ভিডিও তুলে সেই ঘটনার পুনর্গঠন করছে সিবিআই। নারদে অভিযুক্ত বাকিদের ক্ষেত্রে এই পুনর্গঠনে সমস্যা না হলেও তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মুকুল রায় ও বর্ধমানের প্রাক্তন পুলিশ সুপার এসএমএস মির্জার ক্ষেত্রে হোঁচট খেয়েছে তারা।

Advertisement

২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে যে ফ্ল্যাটে বসে ম্যাথুর সঙ্গে মুকুলের কথা হয়েছিল, বর্ধমানের যে অফিসে বসে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল মির্জাকে— দু’জনের কেউই এখন আর সেই ফ্ল্যাট ও অফিসে নেই। মুকুলের দাবি, ভাড়ায় নেওয়া ওই ফ্ল্যাট এখন ছেড়ে দিয়েছেন। আর মির্জা বর্ধমান থেকে বদলি হয়ে ব্যারাকপুরে।

সিবিআই জানিয়েছে, পুনর্গঠনের এই ভিডিও তথ্য প্রমাণ হিসেবে আদালতে পেশ করা হবে। অভিযুক্ত প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই সেই পুনর্গঠন জরুরি। সিবিআই জানিয়েছে, কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘অ্যান্টি চেম্বারে’ ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ ও এক অফিসারের সামনে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। সম্প্রতি মেয়রের ঘরে সেই ঘটনার পুনর্গঠনের ভিডিও তুলেছে সিবিআই। ইকবাল না থাকলেও শোভন ও ওই অফিসারকে থাকতে হয়েছিল।

Advertisement

একই ভাবে এ বার মুকুল ও মির্জাকে তাঁদের সেই পুরনো আস্তানায় ফিরিয়ে এনে ভিডিও করতে চায় সিবিআই। ইতিমধ্যে মুকুল ও পুলিশ কর্তাকে নোটিস দিয়ে তা জানানো হয়েছে। মুকুল বাড়িওয়ালার সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। মির্জা জানিয়েছেন, সরকারি অনুমতির প্রয়োজন। সিবিআই জানিয়েছে, প্রয়োজনে রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে মির্জাকে বর্ধমানে নিয়ে গিয়ে ওই ভিডিও তোলা হবে।

তদন্তকারীদের কথায়, ২০১৪-য় কলকাতার এলগিন রোডের একটি ফ্ল্যাটে ম্যাথুর সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল মুকুলকে। সিবিআইয়ের দাবি, ম্যাথুর দেওয়া সম্পাদিত ফুটেজ অনুযায়ী পুলিশ কর্তা মির্জাকে টাকা দেওয়ার জন্য মুকুল সে দিন ম্যাথুকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে মুকুল তাঁকে নিজের অফিসে ডেকে পাঠান।

সিবিআইয়ের কাছে ম্যাথুর দাবি অনুযায়ী, সেই অফিসে বসে কয়েক লক্ষ টাকা নেওয়া হলেও ম্যাথুকে ঘরের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে ওই লেনদেনের কোনও
ছবি হয়নি। অন্য এক জন সেই টাকা ম্যাথুর টাকা নেতাকে পৌঁছে দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি এবং তৃণমূলের এক মহিলা বিধায়কের ছবি অসম্পাদিত ফুটেজে রয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। পুনর্গঠনের সময়ে মুকুলের অফিসের ওই ব্যক্তি
ও মহিলা বিধায়ককে হাজির করতে চায় সিবিআই।

তদন্তকারীদের কথায়, বর্ধমানে মির্জাকে টাকা দেওয়ার সময় পুলিশ কর্তার দুই দেহরক্ষী ও দু’জন ব্যবসায়ী সেখানে ছিলেন। বর্ধমানের এসপি-র কোয়ার্টারে তাঁদের হাজির করারও চেষ্টা হবে বলে সিবিআই জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন