দু’হাতে, দু’পায়ে ২৪ ঘণ্টা বেড়ি পরিয়ে রাখা হচ্ছে। সেগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে শুধু প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার সময়ে। আর খাওয়ার সময়ে শিকল এমন ভাবে পরানো থাকে যে, দু’হাতই ব্যবহার করতে হয়।
আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে তাকে এই ভাবে রাখা হচ্ছে এবং এতে তার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগ জানিয়ে এর বিহিত চাইল সন্দেহভাজন ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গি, বীরভূমের মহম্মদ মসিউদ্দিন ওরফে আবু মুসা।
এ দিন কলকাতার এনআইএ আদালতে পশ্চিমবঙ্গের আইএস সংক্রান্ত ওই মামলায় মুসার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের কথা ছিল। চার্জ গঠন হয়নি। বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস দু’পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনেছেন। নিরাপত্তার কারণে ভিডিও-কনফারেন্সের মাধ্যমে মুসার বিচার চেয়ে আবেদন করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তাদের বিশেষ কৌঁসুলি শ্যামল ঘোষ জানান, মুসা এমন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের পরিকল্পনা করেছিল, যাতে দেশের একতা ও শান্তি-সম্প্রীতি নষ্ট হয়।
মুসার আইনজীবী জাকির হোসেনের প্রশ্ন, ২০১৬-র ৪ জুলাই বর্ধমান স্টেশনে তাঁর মক্কেলকে ধরা হলে ৭ জুলাই লিলুয়া স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে তার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হল কী ভাবে? জাকিরের সওয়াল শেষ হতেই কাঠগড়ায় দাঁড়ানো মুসা বিচারকের উদ্দেশে বলে, জেলে তাকে অষ্টপ্রহর বেড়ি পরিয়ে রাখা হচ্ছে।
গত ৩ ডিসেম্বর এক কারারক্ষীর মাথায় পাথর দিয়ে এবং জেলে বসে তৈরি করা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মুসা। জেলের এক আধিকারিক এ দিন বলেন, ‘‘মুসা অত্যন্ত হিংস্র স্বভাবের। কখন কী করে ফেলবে, তা বোঝা যায় না। যখন মনে হয়, মুসা কিছু ঘটিয়ে ফেলতে পারে, তখন হাতকড়া পরানো হয়। তবে ওর পা কখনও বেঁধে রাখা হয় না।’’ ওই অফিসার জানান, ৩ ডিসেম্বরের ঘটনার পরে মুসার উপরে ২৪ ঘণ্টা কড়া নজরদারির বন্দোবস্ত হয়েছে।
মুসার অভিযোগ নিয়ে বিচারক এ দিন কোনও মন্তব্য করেননি।