TMC Workers and DA Protest

ময়দানে জোড়া মঞ্চে মারধর ও ইন্ধনের নালিশ

অভিষেকের যুব তৃণমূলের সভা শুরুর পরে মিন্টু পাইক নামে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের এক আন্দোলনকারী শিক্ষক শৌচাগারে যাওয়ার সময় তৃণমুল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের হাতে মার খেয়েছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৭:২১
Share:

সরকারকে ক্ষোভের বার্তা দিতে চকলেট এবং ফলের রস ডিএ আন্দোলনকারীদের হাতেও। বুধবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ

পাশাপাশি ধর্নামঞ্চ আর সভা হলেও মাঝখানে পাঁচিল ছিল টিনের। সর্বোপরি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ, একই দিনে শহিদ মিনার ময়দানে পরস্পরের অনতিদূরে এক পক্ষের ধর্না-আন্দোলন এবং অন্য পক্ষের রাজনৈতিক সভা হতে বাধা নেই, কিন্তু কোনও পক্ষ যেন কোনও রকম উস্কানিমূলক কিছু না-করে বা না-বলে। বুধবার এক পাশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা হল এবং অন্য পাশে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলন-মঞ্চে ধর্না-অনশন চলল ঠিকই। কিন্তু কোনও পক্ষই উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশ পুরোপুরি মানেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

অভিষেকের যুব তৃণমূলের সভা শুরুর পরে মিন্টু পাইক নামে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের এক আন্দোলনকারী শিক্ষক শৌচাগারে যাওয়ার সময় তৃণমুল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের হাতে মার খেয়েছেন বলে অভিযোগ। মিন্টুর সঙ্গে থাকা অন্য দু’জনকেও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে।

অন্য দিকে, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের বিরুদ্ধে উঠছে অন্য রকম প্ররোচনা বা ইন্ধনের অভিযোগ। মঞ্চের সদস্যেরা এ দিন গণ অনশনের ডাক দিয়ে ফলের রস আর চকলেট খান। আন্দোলনকারীদের দাবি, ৪৪ দিন প্রকৃত অনশন করেও তাঁদের দাবি মেটেনি। তাই এ দিন ফলের রস আর চকলেট খেয়ে ‘অনশন’ করলেন। এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘এক অনশনকারী নাকি টানা অনশনে জল পর্যন্ত খাননি! শুনেছি, উনি নাকি রাতে ফলের রস আর স্যান্ডুইচ খেতেন। আমরা তাঁরই অনুপ্রেরণায় এ দিন এই ভাবে অনশন করলাম।’’ তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, ডিএ নিয়ে আন্দোলনকারীদের এই আচরণও প্ররোচনামূলক। কারণ, সাধারণত ফলের রস খেয়ে অনশন ভাঙা হয়, তা খেয়ে অনশন হয় না।

Advertisement

এ দিকে, মঞ্চের আহত সদস্য, হুগলির বাসিন্দা মিন্টু বলেন, ‘‘শৌচাগারে যেতেই যুব তৃণমূলের ব্যাজ পরা কয়েক জন আমাকে শৌচাগারের ভিতরে টেনে নিয়ে যায়। আমার বুকে-হাতে আঘাত লেগেছে। আমার সঙ্গে থাকা অন্য দু’জনকেও হেনস্থা করা হয়।’’ মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘মিন্টুর চিকিৎসার পরে ময়দান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরে আদালতেরও দ্বারস্থ হব। বৃহস্পতিবার আমাদের যে-মহামিছিল হবে, তাতে শিক্ষকেরা হাঁটবেন কালো ব্যাজ পরে।’’ লালবাজার জানিয়েছে, শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আজগুবি সব গল্প। এমন পাড়ার ঝগড়া সর্বত্র হয়। সিনেমা হলের শৌচাগারেও এ-রকম ধাক্কাধাক্কি হয়। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’ আজ, বৃহস্পতিবার হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে মহামিছিল করবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। শহিদ মিনারে জমায়েতের পরে সেখানে মহাসম্মেলন হবে।

অভিষেকের সভার অনতিদূরে, মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে অন্যান্য দিনের মতোই নিয়োগের দাবিতে বসে ছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। ২০১৪ সালের ‘প্রাইমারি টেট নট ইনক্লুডেড’ চাকরিপ্রার্থীদের কারও হাতে পোস্টার ছিল, ‘অভিষেকবাবু, দু’পা এগোলেই আমাদর মঞ্চ। আমাদের দুর্দশা দেখে যান’। এ দিনই চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত বৃত্তিমূলক শিক্ষক, পশ্চিমবঙ্গ এনএসকিউএফ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টরা তাঁদের ৫৬তম অবস্থানের দিনে বিক্ষোভ-মঞ্চে বসে নুন-ভাত খান। তাঁদের অভিযোগ, কাজ করে নিজের কষ্টার্জিত উপার্জনে নুন-ভাতেই তাঁরা খুশি ছিলেন। কিন্তু সেটাও কেড়ে নিচ্ছে এই সরকার। তাঁদের দাবি, ৬০ বছর পর্যন্ত চাকরি সুনিশ্চিত করতে হবে এবং যাঁদের ছাঁটাই করা হয়েছে, তাঁদের বেতন-সহ পুনর্বহাল করতে হবে বিদ্যালয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন