স্থগিত বিশেষ পর্ব

ধনখড়কে এড়িয়েই সমাবর্তন যাদবপুরে

অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশেষ পর্ব আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৯
Share:

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র

অবশেষে সমাবর্তনের ‘বিশেষ পর্ব’ (স্পেশ্যাল কনভোকেশন) স্থগিতই করে দিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। শনিবার তাদের কর্মসমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আগামী ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তনের বাকি অংশ হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানান। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে যাদবপুরের পড়ুয়ারা জানিয়েছিলেন, আচার্য তথা রাজ্যপাল এলে সমাবর্তন বয়কট করে বিক্ষোভ দেখাবেন এবং তাঁর হাত থেকে তাঁরা ডিগ্রি নেবেন না। তার পরেই সমাবর্তনের ‘বিশেষ পর্ব’ স্থগিত রাখার কথা ভাবেন কর্তৃপক্ষ। কারণ, ওই ‘বিশেষ পর্বে’-ই সাম্মানিক ডিলিট এবং ডিএসসি প্রাপকদের ডিগ্রি দিয়ে থাকেন আচার্য তথা রাজ্যপাল।

Advertisement

এ বার সাম্মানিক ডিলিট পাওয়ার কথা ছিল কবি শঙ্খ ঘোষ এবং প্রাক্তন বিদেশসচিব সলমন হায়দরের। ডিএসসি পেতেন বিজ্ঞানী সিএনআর রাও এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধিকর্ত্রী সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ দিন সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যপাল এলে সমাবর্তন বয়কট করার কথা জানিয়েছিল সব ক’টি ছাত্র সংগঠন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশেষ পর্ব আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। উচ্চশিক্ষা সচিব মারফত তা রাজ্যপালকে জানানো হয়েছে।’’ ২০১৪-য় ‘হোক কলরব’ আন্দোলনের সময় তৎকালীন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সমাবর্তনে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাঁর হাত থেকে ডিগ্রি নিতে অস্বীকার করেন এক ছাত্রী।

এই সিদ্ধান্ত জেনে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আচার্যই সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে আমাকে না-জানিয়ে যে ভাবে সমাবর্তন থেকে বাদ দেওয়া হল, তাতে স্পষ্ট যে রাজ্য সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতিকরণ করছে।’’ সূত্রের খবর, সমাবর্তন নিয়ে কাল, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠক হবে। সেখানেও রাজ্যপাল থাকছেন না। এ নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকেও আচার্যেরই সভাপতিত্ব করার কথা। সেই বৈঠকেও আচার্যকে না-রাখার সিদ্ধান্তও পদমর্যাদার জন্য অপমানজনক।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:ধনখড়কে এড়িয়েই সমাবর্তন যাদবপুরে

এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে যে ভাবে দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে, যে ভাবে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের উপর আক্রমণ হয়েছে, তার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায় রাজভবনের ঘোষবাবুর প্রতি ছাত্রছাত্রীরা যদি ক্ষুব্ধ হয়ে থাকে, কিছু করার নেই।’’ অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (আবুটা)-এর তরফে গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত থেকে পরিষ্কার যে সমাবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সঙ্কটাপন্ন। রাজ্যপালের ভূমিকা আচার্যসুলভ মনে হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন