Jadavpur University

ইস্তফার ইঙ্গিত সুরঞ্জনের, বললেন তিনি স্বাধিকারের পক্ষে

ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশ যাদবপুরের উপাচার্যের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ১৩:৩৬
Share:

উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। (ডান দিকে)। ছবি শশাঙ্ক মণ্ডল।

একদিকে সরকারি সিদ্ধান্ত অন্যদিকে প্রবেশিকা ফেরানোর দাবিতে পড়ুয়াদের অনশন, ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে অধ্যাপকদের সরে আসার সিদ্ধান্ত। এই দুইয়ের ফলে তৈরি হওয়া অচলাবস্থায় যাদবপুরের উপাচার্য পদে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন সুরঞ্জন দাস। সোমবার অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আমি আর বেশিদিন উপাচার্য থাকছি না। আমি ভাল উপাচার্য হতে পারিনি। তোমরা খুব তাড়াতাড়ি নতুন উপাচার্য পাবে।’’

Advertisement

সরকারি সিদ্ধান্তের প্রশ্নে তাঁর অসহায়তার কথাও তুলে ধরে কার্যত স্পষ্ট করে দেন, তিনি স্বাধিকারের পক্ষেই। তিনি বলেন, ‘‘এই চেয়ারে বসে আমি ব্যর্থ। চেয়ারে না থাকলে হয়তো অন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম। আমি স্বাধিকারের পক্ষেই।’’ তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন, ‘‘উনি যদি স্বাধিকারের পক্ষেই হন, তবে এতদিন তা ভঙ্গ করলেন কেন?’’

কলাবিভাগে প্রবেশিকা ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। গত ৫০ ঘণ্টা ধরে অনশনে রয়েছেন ২০জন আন্দোলনকারী। অধ্যাপকদের অধিকাংশই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত মুখ খুললেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।

Advertisement

অনশনরত পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।

যাদবপুরে প্রবেশিকা বিতর্কে উপাচার্যের এমন মন্তব্যে সরগরম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের বক্তব্য, তাহলে কি উপাচার্য চাপের মুখে প্রবেশিকা রদ করে দিয়েছিলেন? দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নিয়ম বদলের নেপথ্যে কি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও ভূমিকা রয়েছে? পড়ুয়াদের দাবি, হয়তো চাপে পড়েই উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন কমিটিকে নম্বরের ভিত্তিতে পড়ুয়া ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয়েছিল, তা না হলে এদিন উপাচার্য কেন নিজেকে ব্যর্থ বলে তুলে ধরতে চাইছেন? তাঁর তো ওই চেয়ারে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায় রয়েছে।

অধ্যাপক সংগঠন জুটা জানিয়েছে, শেষ পর্যন্ত কিছুটা পরিষ্কার হয়ে গেল কেন এই ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে? তাঁদের দাবি, যতক্ষণ না পর্যন্ত কলাবিভাগে ছ’টি বিষয়ে প্রবেশিকা ফিরছে, তাঁরা আন্দোলনকারীদের পাশেই রয়েছেন। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপের চিন্তাভাবনাও চলছে।

আরও খবর: ফেরাতেই হবে প্রবেশিকা, যাদবপুরে অনশন শুরু পড়ুয়াদের​

সোমবার সহ-উপাচার্যকে নিয়ে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। অনশন তুলে নেওয়ার অনুরোধও জানান। সেই সময় তিনি পড়ুয়াদের বলেন, ‘‘এই চেয়ারে না বসে হয়তো অন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম।’’ পাশাপাশি তিনি এও মনে করিয়ে দেন, যাদবপুরের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপাল তথা আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করবে কলাবিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে, না কি নম্বরের ভিত্তিতেই ভর্তি নেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে। আপাতত, আচার্যর অপেক্ষার নির্দেশই রয়েছে যাদবপুর কর্তৃপক্ষ। তাঁর নির্দেশ পাওয়ার পরই কর্মসমিতি বৈঠকে বসবে। ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন তুলে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

আরও খবর: যাদবপুরে অচলাবস্থা অব্যাহত, কেশরী-পার্থের কাছে সুরঞ্জন

ক্যাম্পাস সাক্ষাৎকারে প্রচুর চাকরি, দাবি যাদবপুরের

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন