চাকরি নয়, বিদেশে অপহৃত

পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার কাজিপাড়ার বাসিন্দা শেখ রাজীব হোসেন, শেখ জিয়াউল হোসেন এবং মুর্শিদাবাদের ডোমকলের বাসিন্দা মহম্মদ সাবির আহমেদ গত ৯-১০ মাস ধরে কানাডার টরন্টোয় চাকরি করতে যাবেন বলে দিল্লির একটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চালান।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৭ ০০:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

টাকা দিলেই চাকরি মিলবে, তা-ও একেবারে বিদেশে! প্রতারণার এমন ফাঁদ পাতা দেশের সর্বত্র। হামেশাই যার শিকার হচ্ছেন চাকরিপ্রার্থী তরুণ-তরুণীরা। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনায় প্রতারকদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ‘অপহৃত’ হওয়ার পরে এখন ব্যাঙ্ককে আটকে রয়েছেন এ রাজ্যের তিন যুবক। অপহরণকারীদের হাত থেকে মুক্তি পেলেও কবে তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন, কেউ জানে না। ওঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিদেশ মন্ত্রক এবং দিল্লির হরিনগর
পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থী যুবকদের পরিবার।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার কাজিপাড়ার বাসিন্দা শেখ রাজীব হোসেন, শেখ জিয়াউল হোসেন এবং মুর্শিদাবাদের ডোমকলের বাসিন্দা মহম্মদ সাবির আহমেদ গত ৯-১০ মাস ধরে কানাডার টরন্টোয় চাকরি করতে যাবেন বলে দিল্লির একটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চালান। শেখ রাজীব হোসেনের আত্মীয় মহম্মদ ইজাজ আহমেদের অভিযোগ, ‘‘বিদেশে চাকরি পেতে আমার ভাই ও তার দুই বন্ধু দিল্লির হরিনগর থানা এলাকার একটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা বলে। ওরা গত ৬ জুলাই সংস্থার কর্ণধারের সঙ্গে দেখা করে। তিনিই পরের দিন তিন জনকে ব্যাঙ্ককে পাঠিয়ে দেন। দিন চারেক পরে আমার ভাই রাজীব বাড়িতে ফোন করে বলে, নগদ ১২ লক্ষ টাকা না দিলে ওরা চাকরি দেবে না বলছে। তাড়াতাড়ি টাকা পাঠাতে তাগাদা দিতে থাকে। বারবার টাকার কথা বলতেই আমাদের সন্দেহ হয়।’’

ব্যাঙ্ককে পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে মহম্মদ ইজাজ আহমেদের। তাঁর কথায়, ‘‘গত মাসের ১৪ তারিখ রাজীব অচেনা একটি নম্বর থেকে ফোন করে জানায়, তারা অপহরণকারীদের পাল্লায় পড়েছে। তাদের উদ্ধারের জন্য একটি নম্বরও দেয় সে।’’ সেই নম্বরে ফোন করে জানা যায়, সেটি এক ট্যাক্সিচালকের ফোন নম্বর। অপহরণকারীরা তিন জনকে কম্বোডিয়ায় ফেলে রেখে চম্পট দিয়েছিল। পরে ওই ট্যাক্সিচালকের সহায়তায় তারা ব্যাঙ্কের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে যান।

Advertisement

এর পরে ইজাজের পরিবারের তরফে গত ২২ জুলাই সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থানায় অপহরণের মামলা দায়ের করা হলে মহম্মদ কাদের খান, সৈয়দ এহসান আলি ও সলমন নামে তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে সেখানকার পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, এ রাজ্যের তিন যুবক এখন তাইল্যান্ডের ভারতীয় দূতাবাস ও তাইল্যান্ড ট্যুরিস্ট পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। ওই চক্রের বিষয়ে আরও খবর পেতে আরও কিছু দিন তাঁদের ব্যাঙ্ককে রাখা হতে পারে বলে খবর।

ইজাজের অভিযোগ, ‘‘বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে চলা আন্তর্জাতিক পাচার-চক্রের বীজ ভারতেই রয়েছে। অথচ, দিল্লির অভিযুক্ত ওই সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ। আমাদের দাবি, দিল্লি পুলিশ অবিলম্বে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন