বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বন্ধ হয় কোচবিহার রাজবাড়ির সংগ্রহশালা। ঠিক তখনই শিয়ালদহ দেওয়ানি আদালতের এক বিচারক সৈকত সরকার ও তাঁর তিন সঙ্গী সেখানে ঢুকতে যান। রক্ষীরা তাঁদের ঢুকতে দেননি। অভিযোগ, বচসা শুরু হয়, তা গড়ায় হাতাহাতিতে। নবমীর সন্ধ্যায় ওই ঘটনায় মদ্যপ অবস্থায় গোলমালের অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে থানা থেকে জামিন পান সৈকতবাবু। বাকিদের আদালতে তোলা হলে সেখানে জামিন মেলে।
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সৈকতবাবু পুজোর ছুটিতে কোচবিহারের বাড়িতে এসেছিলেন। নবমীর সন্ধ্যায় বন্ধুদের নিয়ে রাজবাড়িতে যান। ঢুকতে বাধা পান। তখনই নিজের পরিচয় দিয়ে সৈকতবাবু ঢুকতে দেওয়ার দাবি জানান বলে অভিযোগ। বাদানুবাদ থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। দুই পক্ষের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। ভাঙচুরও হয়। রাজবাড়ি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পাওয়ার পর রাতেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “এক বিচারক সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় রাজবাড়িতে ঢুকে গোলমালের অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। বিচারককে থানা থেকে জামিন দেওয়া হয়। বাকিদের আদালতে তোলা হয়।” ওই বিচারক সহ অন্য অভিযুক্তদের এক আইনজীবী আবদুল জলিল আহমেদ বলেন, “ওই ব্যাপারে পুলিশের কাছে আপস মীমাংসানামাও জমা পড়েছে। বিচারক থানা থেকেই জামিন পান। বাকিরা সবাই মঙ্গলবার আদালতে জামিন পেয়েছেন।”
কোচবিহার রাজবাড়ি বরাবরই পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য। পুজোর সময় রাজবাড়িতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান। কিছু দিন আগে রাজবাড়ির একটি ঘর থেকে বিলিয়ার্ডের বল উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকে নিরাপত্তায় কড়াকড়ি করা হয়। পরে ওই বল উদ্ধার হলেও কড়াকড়ি
জারি রয়েছে।
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কলকাতা সার্কেলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট শান্তনু মাইতি বলেন, “আমার কাছে ওই ব্যাপারে কোনও রিপোর্ট আসেনি। ফলে কিছু বলতে পারছি না।” কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “আইন সকলের মেনে চলা উচিত।” অভিযুক্তদের এক আত্মীয়ের দাবি, ওই ছ’জনের মধ্যে বিচারক ছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার এবং কলেজ পড়ুয়া ছিলেন। সংগ্রহশালায় ঢোকা নিয়ে বাদানুবাদ হয়। নিরাপত্তারক্ষীরাই তাঁদের একজনকে মারধর করে বলে তাঁরা পাল্টা দাবি করেছেন।