সাক্ষাৎ: নবান্নে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
দ্বিতীয় বারের জন্য তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসে ফের কলকাতা এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন কে চন্দ্রশেখর রাও। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি যখন বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে, তখন মমতার সঙ্গে দেখা করে তিনি সোমবারও ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের কথাই বলে গেলেন।
রাওয়ের বক্তব্য, ‘‘টিআরএসের লক্ষ্য হল কেন্দ্রে বিজেপি ও কংগ্রেসকে বাদ দিতে তৃতীয় জোটকে গড়ে তোলা। সকলের সঙ্গেই আলোচনা চলছে, তা চলবেও। তাড়াহুড়োর কিছু নেই। ফলপ্রসু কিছু হলে আপনাদের জানাব।’’ নবান্নে এ দিন ঘণ্টাখানেক ছিলেন তিনি। তিন মন্ত্রীকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁকে নবান্নে স্বাগত জানান। বৈঠক শেষেও গাড়ির কাছে এসে তাঁকে ছেড়ে দিয়ে যান মমতা। তবে বৈঠক নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও কথা বলেননি মমতা।
নবান্ন থেকেই কালীঘাটে পুজো দিতে যান রাও। বৈঠকের পরে তিনি বলেন, ‘‘গত কাল ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। আজ দিদির কাছে এসেছি। দিদির সঙ্গে খুব ভাল আলোচনা হয়েছে।’’
বছরের শুরুতে কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা নবান্নে এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গিয়েছিলেন। তার পরে গত মার্চ মাসে নবান্নে এসে মমতার সঙ্গে দেখা করে ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের তৎপরতা শুরু করেছিলেন রাও। কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের জেরে চন্দ্রবাবুর নেতৃত্বে বিজেপি-বিরোধী দলগুলির জোট তৎপরতা শুরু হয়। চন্দ্রবাবুও নবান্নে আসেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। এরই মধ্যে আবার মমতার সঙ্গে রাওয়ের বৈঠক নিয়ে খুশি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘যে কোনও জোট করার অধিকার সকলের আছে। তবে আমাদের এনডিএ শক্তপোক্ত আছে। আমরাই জিতব।’’
কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন, বিভিন্ন বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে এবং প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে বাইরে রেখে রাও আসলে কাদের সুবিধা করতে চাইছেন, বোঝাই যাচ্ছে! বাংলার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস বা বিজেপিকে বাদ দিয়ে কোনও সরকারই কেন্দ্রে সম্ভব নয়! তিন রাজ্যে কংগ্রেসের জয়ের পরে রাওয়ের এই তৎপরতায় বোঝা যাচ্ছে, মানুষকে বোকা বানিয়ে ওঁরা বিজেপির হাতেই তামাক খাচ্ছেন!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও মন্তব্য, ‘‘একই সঙ্গে চন্দ্রবাবু এবং রাওয়ের হাত ধরে তৃণমূল সুবিধাবাদী রাজনীতি করছে এবং বিজেপির সুবিধা হচ্ছে।’’