Kabir Suman mamata banerjee

রাগ ‘মমতা’, গানেও মমতা, করোনা যুদ্ধে নেত্রীকে দেখে কবীর সুমন উচ্ছ্বসিত

দিন কয়েক আগে খেয়াল আঙ্গিকে একটা নতুন গান বেঁধেছেন সুমন। কেন এই নতুন গান?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ১৭:১৯
Share:

করোনা সংক্রমণ রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে কাজ করছেন তাতে গর্বিত কবীর সুমন। — ফাইল চিত্র।

গমগমে গলাটা শুনলেই চিনে নেবেন যে কোনও বাঙালি। ‘‘আমি রাগটির নাম বদলে দিয়েছি। রাগটির নাম রেখেছি মমতা।’’ বলছেন কবীর সুমন। আর সোশ্যাল মিডিয়া হয়ে সে অডিয়ো ক্লিপ এখন ঘুরছে হাতে হাতে।

Advertisement

দিন কয়েক আগে খেয়াল আঙ্গিকে একটা নতুন গান বেঁধেছেন সুমন। কেন এই নতুন গান? যে রাগে সেই গান গাওয়া, সেই রাগের নামই বা বদলে দিলেন কেন? গান শুরু হওয়ার আগে সেই ব্যাখ্যা শোনা যাচ্ছে অডিয়ো ক্লিপে। স্থিতধী ভঙ্গিতে সুমন বলছেন— ‘রাগ মমতা, আজ ২৭ মার্চ, ২০২০ সাল, তিন তাল...।’

তার পরেই শুরু হচ্ছে গানটা— ‘তোমাকে দেখি সময়ের সাথে আছ ঠায় / তোমাকে শুনি এই রাগে এই মমতায় / তোমাকে পাই আটপৌরের সাবলীলে / তুমি রয়েছো মানুষের পাশে রাস্তায়।’

Advertisement

এক নেত্রী তথা এক সহনাগরিককে শ্রদ্ধা এক শিল্পীর। করোনা সংক্রমণ রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে কাজ করছেন, তা দেখে তিনি গর্বিত— বলছেন কবীর সুমন। তিনি নিজে রাস্তায় নেমে কিছুই করতে পারছেন না, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকতে পারার ‘গর্ব’টা এই নতুন গানের মাধ্যমে প্রকাশ করছেন বলে জানাচ্ছেন শিল্পী।

আরও পড়ুন- দু’মাস সতর্ক থাকুন: মমতা

খেয়াল আঙ্গিক নিয়ে সম্প্রতি বিশেষ কিছু কাজ শুরু করছেন কবীর সুমন। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করোনাযুদ্ধের প্রশস্তিও তিনি খেয়ালেই করেছেন। ‘নূপুরধ্বনি’ নামে একটি রাগ সৃষ্টি করেছিলেন প্রয়াত পান্নালাল ঘোষ। কবীর সুমন জানাচ্ছেন যে, সেই রাগে একটি শুদ্ধ ধৈবত পর্দা লাগিয়ে তিনি একটি নতুন রাগ তৈরি করেছিলেন। তার নাম দিয়েছিলেন ‘নববাংলা’। ওই নামকরণের সঙ্গেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ ছিল। কবীর সুমনের কথায়, ‘‘যে নতুন বাংলা সৃষ্টি হয়েছে এবং হয়ে চলেছে, রূপ নিচ্ছে নতুন নতুন, সেই নববাংলার জন্য।’’ তবে নোভেলকরোনা ভাইরাসের সংক্রমণে প্রায় গোটা বিশ্ব যখন ত্রস্ত, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে কাজ করছেন, তা দেখার পরে ওই রাগের নাম তিনি বদলে দিয়েছেন বলে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছেন। এ বারের নামকরণে আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের প্রশস্তির ইঙ্গিত নয়, সরাসরি মমতার নাম।

শুনে নিন সেই গান

কবীর সুমনের কথায়, ‘‘গত কিছু দিন ধরে এক প্রবল এবং মারাত্মক ভাইরাসের প্রকোপ রুখতে শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যের নেতা হিসেবে শুধু নয়, এক জন মানুষ হিসেবে, এক জন সহ-নাগরিক হিসেবে, যে চেষ্টাটা করছেন, যে ভাবে রাস্তায় নামছেন, যে ভাবে মানুষের পাশে থাকছেন... আমি তো কিছুই করতে পারছি না, আমি তো কিছু বলতেও পারছি না। তিনি এ সবের তোয়াক্কা করেন না। কে করে?... আমি তাই প্রাণপণে চাইছি এই গানটি শোনাতে, সকলকে শোনাতে।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই গান শুনবেন কি না, তিনি জানেন না, মন্তব্য সুমনের। তাঁকে নিয়ে কেউ গান বাঁধল কি না, মমতা তার তোয়াক্কা করেন না বলেও শিল্পী মনে করছেন। তবু গানটা তিনি গাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লড়াইয়ের’ পাশে থাকার জন্য— বলছেন কবীর সুমন। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি (মমতা) কি শুনবেন? আমি জানি না। কিন্তু সকলে শুনুন।’’

আরও পড়ুন: নতুন করে নিজামউদ্দিনের ৩৫ জন আক্রান্ত, মৃত ৯, বাড়ছে উদ্বেগ

এই গান শুনে অনেকে তাঁকে গালিগালাজ করতে পারেন বলে জানাচ্ছেন সুমন নিজেই। কিন্তু নিজেকে ‘সঙ্গীতের গোলাম’ বলে দাবি করে সুমন জানাচ্ছেন যে, তিনিও ওই সব গালিগালাজকে গুরুত্ব দেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে দালাল-টালাল যেটা বরাবর সকলে বলে থাকেন, সেটাই বলুন। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার গর্ব যে, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেছি। আমার গর্ব যে, এই সময়ের লড়াইতে আমিও আছি, আরও বহু মানুষের সঙ্গে। আমার গর্ব যে, আমি দেখলাম, আমারই দেশের একজন নেতা কী ভাবে, এ পৃথিবীর এক নেতা কী ভাবে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান, মানুষকে জাগিয়ে তোলেন, মানুষের পাশে থাকেন, সময়ের পাশে থাকেন।’’

কবীর সুমনের এই নতুন গান এবং রাগের নতুন নামকরণ নিয়ে বিতর্ক হয়তো তুলতে পারে রাজনৈতিক শিবিরের কোনও কোনও অংশ। কিন্তু যে গানটি তিনি বেঁধেছেন, তার সুর এবং কথা কিন্তু সঙ্গীতজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট প্রশংসা পাচ্ছে। আর প্রশংসিত শিল্পী গানের শেষ দু’লাইনে ফের প্রশস্তি বর্ষণ করছেন তাঁর প্রিয় নেত্রীর প্রতি। সুমন গাইছেন, ‘তোমার নামে নতুন রাগের পরিচয় / সময় আজ বেঁচে থাকবেই মমতায়।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন