প্রতীকী ছবি।
দিঘার রাস্তায় মোটরবাইক চালিয়ে আসছিলেন এক মাঝবয়সি ব্যক্তি। হেলমেট ছাড়াই। তাঁকে দাঁড় করাল কয়েক জন স্কুলছাত্রী। হেলমেট পরার কথা বুঝিয়ে বলার পরে কপালে এঁকে দিল ভাইফোঁটার চন্দনচিহ্ন!
এত দিন বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে ওরা। এ বার পথে নেমেছে কন্যাশ্রীরা। পথ-নিরাপত্তায় পুলিশ দীর্ঘদিন ধরেই নানা অনুষ্ঠান করে আসছে। এ বার সেই অনুষ্ঠানেই সামনের সারিতে থাকছে কন্যাশ্রী স্কুলপড়ুয়ারা। ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় এই অনুষ্ঠান হয়েছে।
কলকাতা পুলিশ বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজে গিয়ে রাজ্য সরকারের ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ বা ‘সামলে চালাও, জান বাঁচাও’ প্রকল্পের প্রচার চালাচ্ছে। তাতে নতুন প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে বলে দাবি পুলিশকর্তাদের। নতুন প্রজন্মকে আরও উদ্বুদ্ধ করতে কন্যাশ্রীদের উপরেই ভরসা রাখছে রাজ্য ট্রাফিক পুলিশ। দক্ষিণবঙ্গের একটি জেলার ডিএসপি (ট্রাফিক) বলেন, ‘‘কন্যাশ্রী স্কুলছাত্রীরা বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের অংশীদার। মানুষের মধ্যে ওদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই ওদের নিয়েই প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’
পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, রাস্তায় নেমে মানুষকে সতর্ক করার অভিযানে পুলিশকর্মীরাও থাকছেন মেয়েদের সঙ্গে সঙ্গে। যাঁরা হেলমেট পরার মতো পথবিধি মানছেন না, তাঁদের যথাসম্ভব বুঝিয়ে বলা হচ্ছে। গাঁধীগিরির ধাঁচে কপালে চন্দনের ফোঁটা দেওয়ার পাশাপাশি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ফুলের তোড়া। রাজ্য ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘শুধু পথে নেমে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টাতেই কর্মসূচি শেষ হচ্ছে না। কন্যাশ্রীদের নিয়ে পথনাটিকাও করা হবে। তাতে থাকবে স্কুলের সাধারণ পড়ুয়ারাও। এই বিষয়ে বিভিন্ন স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’’
রাজ্য ট্রাফিক পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, কন্যাশ্রী স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে প্রচারের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাড়াতে নতুন কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। গাড়িচালকদের অসতর্কতায় ডিভাইডার বা পথবিভাজিকায় ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটে। তা ঠেকাতে রাজ্য ও জাতীয় সড়কের ডিভাইডারগুলিতে ‘রিফ্লেক্টর’ বসানো হচ্ছে। এর ফলে বিশেষত রাতের শহরে গাড়িচালকেরা বাড়তি সুবিধা পাবেন। এ ছাড়াও প্রতিটি জেলার ট্রাফিক পুলিশকে একটি করে বিশেষ গাড়ি দেওয়া হচ্ছে। সেই গাড়িতে সিসি ক্যামেরা থাকবে এবং স্পি়ডগান থাকবে। ওই সব গাড়িতে চেপে মূলত রাজ্য ও জাতীয় সড়কে বেপরোয়া গতির গাড়ি চিহ্নিত করবেন পুলিশকর্মীরা।