ফের বিস্ফোরণের খবর টিভিতে দেখেই  ফিরল আতঙ্ক

সেচ দফতরের এই প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “অহিংসার পূজারী মহাত্মা গাঁধীর জন্মদিনের সকালে ফের হিংসা! টিভিতে বিস্ফোরণে মৃত ফুটফুটে ছেলেটার ছবি দেখে আমার নাতির জন্য বুক কেঁপে উঠছে। দু’জনে একই বয়সী হবে।’’

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৫৬
Share:

ফিরে দেখা: নাতি কোলে হাসান চৌধুরী। ছবি: উদিত সিংহ

চার বছর পরে টেলিভিশনের পর্দায় ফের বিস্ফোরণের খবর। শিশু নাতিকে আঁকড়ে ধরেছিলেন বছর পঁচাত্তরের হাসান চৌধুরী। মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়ের এই বাসিন্দাকে ‘ফিরে দেখা’য় বাধ্য করল দমদমের নাগেরবাজারের বিস্ফোরণ।

Advertisement

২০১৪ সালের ২ অক্টোবর, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর জন্মদিনে হাসানেরই একটি বাড়ির দোতলায় এক বিস্ফোরণে তোলপাড় হয়েছিল দেশ। ‘আইইডি’ (ইম্প্রোভাইজ়ড্‌ এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরির সময়ে ফেটে গিয়ে দু’জনের মৃত্যুর পরে খোঁজ মিলেছিল এক আন্তর্জাতিক জঙ্গি-চক্রের। তদন্তে নেমেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। এখনও সে বাড়ি তালাবন্ধ। এনআইএ জানিয়েছে, মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা আদালতের নির্দেশ ছাড়া, বাড়ির ‘সিল’ ভাঙা যাবে না।

নাগেরবাজারের খবর দেখে এ দিন বারবার বাসস্থানের সামনের ওই বাড়ির দিকে চোখ চলে যাচ্ছিল হাসানের। সেচ দফতরের এই প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “অহিংসার পূজারী মহাত্মা গাঁধীর জন্মদিনের সকালে ফের হিংসা! টিভিতে বিস্ফোরণে মৃত ফুটফুটে ছেলেটার ছবি দেখে আমার নাতির জন্য বুক কেঁপে উঠছে। দু’জনে একই বয়সী হবে।’’ বৃদ্ধ বলতে থাকেন, “বোমাবাজির ঘটনা বা হিংসায় যে কোনও মৃত্যুর খবর আর সহ্য করতে পারি না। ওই দুঃস্বপ্ন ভুলতে চেষ্টা করি। কিন্তু এক-একটা ঘটনা সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।’’

Advertisement

বন্ধ বাড়িটার লাগোয়া কমল দাস ও অসীমাদেবীর বাড়ি। তাঁরাও বললেন, “এই দিনটা এলেই কোথা থেকে মনে ভয়, আতঙ্ক চেপে বসে। এ বছর সকাল থেকে ঠিকই ছিলাম, কিন্তু নাগেরবাজারের বিস্ফোরণ সব কেমন টাটকা করে দিল।’’ ওই ঘটনার পর থেকে বাড়ি ভাড়া দিতে ভয় পান এই পাড়ার প্রায়ই সবাই। দিলেও বারবার নাম, পরিচয় খুঁটিয়ে জেনে নেন। তবুও এখনও ধারেকাছে পুলিশ এলেই তাঁদের মনে হয় ফের পুরনো ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হবে।

হাসান চৌধুরীর পড়শি সমীর মান্ডি, বাপি শেখরা বলেন, ‘‘একই দিনে এ রকম ঘটনা ঘটলে আতঙ্ক ফিরে আসেই। চার বছর আগের দিনটা জীবনটাই বদলে দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন