প্রতিষ্ঠা দিবসে ফের নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার চেষ্টা করল কেএলও।
শনিবার বিকেলের পরে অসমের ধুবুরির সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (কেএলও) প্যাডে তিন পাতার একটি বিবৃতি পাঠানো হয়। সংগঠনকে সক্রিয় করতে উদ্যোগী হয়েছে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কেএলও)। জীবন সিংহের নামে এই ই-মেলে সংগঠনের তরফে এমনই দাবি করা হয়েছে। বিবৃতির শেষে কেএলও চেয়ারম্যান হিসেবে জীবন সিংহ কোচের নামে স্বাক্ষর করা রয়েছে।
শনিবার ছিল কেএলও এর প্রতিষ্ঠা দিবস। বিবৃতিটি প্রতিষ্ঠা দিবসে জীবন সিংহের ভাষণের প্রতিলিপি বলে দাবি করা হয়েছে। বিবৃতির সঙ্গে দিনটি উদযাপনের কিছু ছবিও পাঠানো হয়েছে। সেই ছবিগুলিতে অস্ত্র হাতে বেশ কয়েক জনকে দেখা গিয়েছে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ভারতের সংবিধানের আওতায় থেকে পৃথক কামতাপুর রাষ্ট্রের দাবি আদায় সম্ভব নয়। তাই সংবিধানকে প্রত্যাখ্যান করার আর্জি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘সরকারকে মনে রাখতে হবে প্রতিটি ক্রিয়ারই বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে।’’ তাদের দাবির প্রতি সম মনোভাবাপন্ন সবাইকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার আর্জি জানানো হয়েছে।
পুলিশ অবশ্য এই ই-মেল বার্তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। সূত্রের খবর, বিবৃতি জোগাড় করে খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশের সূত্রের খবর, কেএলও-এর প্যাডে বিবৃতি ই-মেল করে পাঠানো নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের আগে বা পরে ই-মেল পাঠানো হয়। তবে এতদিন সংগঠনের প্রচার সচিব স্তরের কোনও পদাধিকারির নামে ই-মেল পাঠানো হত। এবার সরাসরি সংগঠনের চেয়ারম্যান ‘জীবন সিংহ কোচে’র নামে ই-মেল পাঠানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, ই-মেলের সত্যতা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কোথায় প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়েছে বিবৃতিতে তার কোনও উল্লেখ্য নেই। তবে ই-মেলের বিবৃতির বেশ কয়েকটি ছত্রে সংগঠনকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার আর্জি জানানো হয়েছে। সে কারণে পুলিশ কর্তাদের একাংশও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সমমতের বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে চলতি বছরে একটি যৌথ মঞ্চও তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, বছর দুয়েক আগে জলপাইগুড়িতে বিস্ফোরণের পরে কেএলও র শীর্ষ এবং মাঝারি স্তরের অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা এখনও জেলে রয়েছেন। তাই উত্তরবঙ্গে সংগঠনের হাল ধরার কেউ নেই। এই পরিস্থিতিতে সংগঠনের অস্তিত্ব বজায় রাখতে নতুন করে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই কেএলও চেয়ারম্যানের নামে বিবৃতি বলে গোয়েন্দা কর্তাদের একাংশের দাবি। যদিও, উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষ পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘ই-মেলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। পুলিশের তরফে যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়া রয়েছে।’’