টাকা দিলেই মিলবে সহযোগিতা। চালু হল নতুন পরিষেবা বৃহস্পতিবার।—নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা বিমানবন্দরে প্রতিদিন ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে। বিকল্প বিদ্যুৎ প্রকল্পে তার থেকে অন্তত পাঁচ মেগাওয়াট বেশি উৎপাদনের পরিকল্পনা চলছে। সৌর প্যানেল বা সৌর বিদ্যুতের সাহায্যে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েও হাতে পাঁচ মেগাওয়াট উদ্বৃত্ত রাখতে চাইছেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শ মেনেই নিজেদের কাজে বিমানবন্দরের এই বিকল্প বিদ্যুতের পরিকল্পনা। বৃহস্পতিবার যাত্রীদের জন্য ‘স্বাগত সেবা’ নামে এক পরিষেবা চালু করতে বিমানবন্দরে এসে এ কথা জানান এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান আর কে শ্রীবাস্তব। সেই সঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দরের উন্নয়নে অসমাপ্ত কাজ দ্রুত শেষ করা এবং নতুন এক গুচ্ছ পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
চেয়ারম্যান এ দিন কলকাতা বিমানবন্দরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে অসমাপ্ত প্রকল্প ও উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। পরে চেয়ারম্যান জানান, বিকল্প বিদ্যুতের লক্ষ্যপূরণে বিমানবন্দরের ৫৫ একর জমিতে সৌর প্যানেল বসবে। জমির খোঁজ চলছে। এই প্রকল্পে ১৩০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। রাজ্যের একটি বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে আলোচনাও চলছে কর্তৃপক্ষের। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা মেনে
এই কাজ হবে। কলকাতা বিমানবন্দরের জন্য রোজ ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। এই প্রকল্পে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদন করা হবে।’’
বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করার সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতা বিমানবন্দরের পুরনো ও নয়া টার্মিনালের এরোব্রিজগুলির মধ্যে সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শ্রীবাস্তব জানান, বিমানবন্দরে নতুন টাওয়ার বসানোর জন্য বিকল্প জায়গায় খোঁজ চলছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বর্তমান টাওয়ারটির আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গেই নতুন টাওয়ার তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু প্রথমে যে-জায়গায় সেটি বসানোর কথা ভাবা হয়েছিল, সেখানে কিছু কারিগরি সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা।
তাই নতুন জায়গার খোঁজ চলছে।
এ দিনই একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে ‘স্বাগত সেবা’ পরিষেবা। এতে বিমান ধরতে আসা বা বিমান থেকে নামার সময় যাত্রীদের সহায়তা করবেন ৪৫ জন তরুণ-তরুণী। দিল্লি, মুম্বই, জয়পুর বিমানবন্দরে আগেই এই পরিষেবা চালু হয়েছে। বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের কর্তাদের দাবি, যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতেই এই পরিষেবা।
এই পরিষেবা প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থার ডিরেক্টর প্রদীপ যাদব জানান, বিমানবন্দরে আসার পরে যাত্রীদের লাগেজ-সহ ট্রলির ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে বোর্ডিং পর্যন্ত সব কিছুতে তাঁরা সাহায্য করবেন। নামার পরে বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর ব্যবস্থাও করা হবে। এর জন্য পরিষেবা প্রদানকারীদের মাথাপিছু ৩০০ টাকা দিতে হবে যাত্রীদের। ওই সংস্থা রেল, বিমানের টিকিট বুকিং, হোটেল আর ট্যাক্সির ব্যবস্থারও করবে। সেই জন্য বিমানবন্দরের বাইরে এবং ভিতরে কাউন্টার বসাচ্ছে তারা।
বৃহস্পতিবার অবশ্য এই পরিষেবা বিনামূল্যেই দিয়েছে সংস্থাটি। চেন্নাই থেকে আসা কমল বেইল প্রথম এই পরিষেবা নেন। তাঁর মতে, যাঁরা প্রথম বার বিমানে উঠছেন, তাঁদের এবং প্রবীণদের এই ব্যবস্থায় সুবিধা হবে। তবে এই পরিষেবার বিনিময়মূল্য বেশি বলেই মনে করেন ওই যাত্রী।