আদালতের নির্দেশ ছিল, দুর্গাপুর পুরভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে। তার পরেও ভোটে ব্যাপক সন্ত্রাস হয়েছে, বুধবার এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছিলেন বাম প্রার্থীরা। তার শুনানিতে শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ওই বাম প্রার্থীদের আইনজীবী মারফত রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অবমাননার নোটিস পাঠানোর অনুমতি দিয়েছেন।
ভোট-প্রচার শুরুর সময় থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করে সিপিএম। তাদের অভিযোগ, সন্ত্রাস ছড়াতে সিপিএমের তিন জন প্রার্থী ও এক কর্মীর বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়েছে। এ ছাড়াও এক প্রার্থীর বাড়ির সামনে গুলি ছুড়ে দুষ্কৃতীরা চম্পট দিয়েছে, এমন অভিযোগও করেছিল সিপিএম।
এই সমস্ত ঘটনার পরেই প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা এবং ভোটারদের ভোট নিশ্চিত করার দাবি জানায় সিপিএম। এই বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ-প্রশাসন যাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করে, তার জন্য সুমিত রায়চৌধুরী, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, নৃপেন্দ্রনাথ ঘোষ, রেখা দাস নামে চার জন সিপিএম প্রার্থীর হয়ে হাইকোর্টে ‘রিট পিটিশন’ দাখিল করেন দু’জন আইনজীবী।
গত ১০ অগস্ট সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, দুর্গাপুর পুরসভার ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে। এ দিন সিপিএম প্রার্থীদের আইনজীবীরা জানান, এর পরেই বিচারপতি বাগচী নির্দেশ দেন, ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে। ওই আইনজীবীদের আরও দাবি, নির্বাচনের দিন গোটা পরিস্থিতির উপরে হাইকোর্ট নজর রাখবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন বিচারপতি বাগচী।
যদিও নির্বাচনের দিন পুলিশ ও নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সামনেই বহিরাগতদের এনে তৃণমূল ভোট-লুঠ, বোমাবাজি করেছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলগুলির। এর জেরেই আদালতের অবমাননা হয়েছে দাবি করে বুধবার হাইকোর্টে ফের মামলা দায়ের করেন ওই বাম প্রার্থীরা।
শুক্রবার বাম প্রার্থীদের অন্যতম আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘দুর্গাপুরে পুরভোটের দিন আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কী রকম ছিল, সেই বিষয়টি বিচার্য বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত। বাম প্রার্থীদের তরফে প্রশাসন ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনে আদালত অবমাননার নোটিস পাঠানো হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি দু’সপ্তাহ পরে।’’ এ দিন হাইকোর্টের নির্দেশ শোনার পরে দুর্গাপুরের সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘ভোট-প্রহসনের বিচার এ বার আদালতেই হবে।’’ যদিও আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা জানান, এমন কিছু তাঁর জানা নেই।