ডেঙ্গির রক্তচক্ষু, তবু তথ্য নিয়ে চুপ পুরসভা

আশপাশের পুরসভাগুলি থেকে জ্বর-ডেঙ্গির কিছু কিছু তথ্য মিললেও কলকাতা পুরসভা বেবাক চুপ!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৮ ১২:৫৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

টানা বৃষ্টি আর জমা জলের যন্ত্রণা শুরু হতেই বেড়েছে মশার উৎপাত। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জ্বর। শুধু এনএস১ পজিটিভ-ই নয়, এলাইজা পরীক্ষায় রোগীদের অনেকেরই রক্তে মিলেছে ডেঙ্গির জীবাণু। ডেঙ্গি-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে তথ্য গোপন করার চেষ্টা। আশপাশের পুরসভাগুলি থেকে জ্বর-ডেঙ্গির কিছু কিছু তথ্য মিললেও কলকাতা পুরসভা বেবাক চুপ!

Advertisement

কলকাতা, সল্টলেকের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কয়েকটিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছেন অন্তত ২০ জন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের রক্ত পরীক্ষার ফল এনএস ১ পজিটিভ।

স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, জুলাই মাসেই কলকাতায় ৪ জন, উত্তর দমদমে এক জন, দক্ষিণ দমদমে দু’জন, বরাহনগরে এক এবং খড়দহ পুর এলাকায় তিন জনের রক্তে এনএস১ পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। কলকাতা পুরসভা কিংবা সরকারি হাসপাতাল এনএস১ পজিটিভকে আমল দিতে না-চাইলেও পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, পরিবেশে যে ডেঙ্গির জীবাণু সক্রিয়, অনেকের রক্তে এনএস১ পজিটিভের প্রমাণ পাওয়াটা তারই জলজ্যান্ত লক্ষণ।

Advertisement

আরও পড়ুন: সুখবর! রাজ্য সরকারি কর্মীদের ২০১৯ থেকেই বেতন বৃদ্ধির ইঙ্গিত

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের খবর, জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহেই ওই কলেজের তিন পড়ুয়ার রক্তপরীক্ষার ফল ছিল এনএস১ পজিটিভ। আক্রান্তের মধ্যে রয়েছেন এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া আপন সামন্ত। কয়েক দিন আগে তিনি হস্টেলের দাবিতে ১৩ দিন অনশন করেছিলেন। শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক ছিল। হস্টেলে ফিরেই জ্বরে আক্রান্ত হন। বিশেষ নজরদারিতে রয়েছেন তিনি।

গত বছর ডেঙ্গি নিয়ে তথ্য গোপন করার অভিযোগ উঠেছিল। সে-বার পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় এ বার রাজ্যের ডেঙ্গি রুখতে মার্চ থেকেই পঞ্চায়েত, পূর্তের মতো দফতরকে সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পনামাফিক কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে দাবি স্বাস্থ্য ভবনের। কিন্তু বর্ষায় মশার অত্যধিক বংশবৃদ্ধি আর জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি স্বাস্থ্য দফতরের দাবির যুক্তি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ, পুরসভা বা পঞ্চায়েতের কর্মীরা এলাকায় গিয়ে ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজ কতটা করছেন, তা দেখতে হবে দফতরকেই। পাশাপাশি প্লেটলেটের জোগানের দিকেও নজর দিতে হবে।

স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানাচ্ছেন, প্রথম থেকেই সতর্ক ও সক্রিয় থাকলে এই ধরনের রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অন্যান্য দফতরকে শুধু সচেতনতা প্রসারের দায়িত্ব দিলেই কাজ শেষ হয় না। চিকিৎসাকেও গুরুত্ব দেওয়া দরকার। কলকাতায় জ্বরের রোগীদের বাড়িতে পরিদর্শন করা হবে। এনএস১ পজিটিভ রোগীদের কী অবস্থা, সেই বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবন নিয়মিত খোঁজখবর নেবে, যোগাযোগ রাখবে।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কলকাতা এবং আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন নির্মাণস্থলে যে-ভাবে জল জমে রয়েছে, তাতে ডেঙ্গি নিয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল রয়েছে বলে তা মনে হয় না। আমজনতারও অভিজ্ঞতা একই। অভিযোগ, রক্তদান, অরণ্য সপ্তাহ নিয়ে কাউন্সিলরেরা মাতামাতি করছেন। কিন্তু তাঁদের কেউই মশা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী নন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement