Patna Hospital Murder

পটনার আইসিইউয়ে গ্যাংস্টার খুন: কলকাতা থেকে এক দিনে ধৃত ১০ জন! বাংলা আর বিহার পুলিশের যৌথ অভিযান দিনভর

ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। সে দিন পটনার হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে আইসিইউতে ভর্তি থাকা চন্দন মিশ্র নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করে এক দল দুষ্কৃতী।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ০২:১৬
Share:

পটনায় হাসপাতালে ঢুকে গুলি চালানোর ঘটনায় নিউ টাউন থেকে গ্রেফতার অভিযুক্তরা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পটনায় আইসিইউতে ঢুকে গ্যাংস্টারকে খুনের ঘটনায় শনিবার রাতে কলকাতার আনন্দপুর থেকে ধরা পড়েছেন এক মহিলা-সহ পাঁচ জন। এর আগে সকালে নিউ টাউন থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল বাংলা আর বিহার পুলিশের যৌথ দল। ফলে একই দিনে কলকাতার দুই জায়গায় পৃথক অভিযানে ১০ জন ধরা পড়লেন! সব মিলিয়ে পটনা-কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১।

Advertisement

শনিবার দিনভর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের যৌথ দল। ভোরে পটনা এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) যৌথ ভাবে নিউ টাউনের এক আবাসনে হানা দেয়। সেখান থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত পাঁচ জনের মধ্যে চার জনই খুনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। পুলিশের এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, “পটনার ঘটনার পর অভিযুক্তেরা সেখান থেকে পালিয়ে কলকাতায় চলে এসেছিলেন। তাঁরা প্রত্যেকেই নিউ টাউনের এক আবাসনে লুকিয়ে ছিলেন। ধৃতদের মধ্যে চার জন খুনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। অপর জন অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, নাকি বাকিদের লুকোতে সাহায্য করছিলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” পুলিশের ওই আধিকারিক এ-ও জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের মোবাইলের লোকেশনের সূত্র ধরে তাঁদের সন্ধান মিলেছে। শীঘ্রই অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করিয়ে ট্রানজ়িট রিমান্ডের জন্য আবেদন জানাবে বিহার পুলিশ।

সেই গ্রেফতারির ১২ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই শনিবার রাতে আনন্দপুর থেকে আরও পাঁচ জন ধরা পড়েন। তাঁরাও পটনা কাণ্ডে জড়িত বলে মনে করছে পুলিশ। খুনের পর তাঁরা সটান কলকাতায় পালিয়ে এসে উঠেছিলেন আনন্দপুরের অতিথি আবাসে। শনিবার রাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে তাঁদের আটক করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম সচিন সিংহ, হরিশ কুমার, তৌসিফ এবং ইউনুস খান। শুক্রবার তাঁরা আনন্দপুরের ওই গেস্ট হাউসে এসে উঠেছিলেন। রীতিমতো বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়েই ঘর নিয়েছিলেন তাঁরা। গেস্ট হাউসের তিন তলায় দু’টি ঘর দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। তবে সে সময় তাঁদের হাবভাব দেখে বোঝা যায়নি, সদ্য খুন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁরা! পাঁচ জনের দলটিকে সন্দেহজনক বলেও মনে হয়নি গেস্ট হাউসের কর্মীদের। ধৃতদের মধ্যে এক মহিলাও রয়েছেন। তাঁর নাম এখনও জানা যায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে একটি গাড়ি কলকাতা অভিমুখে আসতে দেখা গিয়েছিল। সেই গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে আনন্দপুর, ভাঙড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তদন্তকারীরা। শেষমেশ শনিবার রাতে আনন্দপুরের ওই গেস্ট হাউস থেকে পাঁচ সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়।

Advertisement

আসল ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। সে দিন পটনার হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে আইসিইউতে ভর্তি থাকা চন্দন মিশ্র নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করে এক দল দুষ্কৃতী। নিহত চন্দন নিজেও গ্যাংস্টার ছিলেন। বিহারের বক্সারের বাসিন্দা চন্দনের বিরুদ্ধে ২৪টি ফৌজদারি মামলা ছিল। তার মধ্যে ১২টি মামলা খুনের। পুলিশের নিরাপত্তায় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল চন্দনের। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ পুলিশের নজর এড়িয়ে এক দল দুষ্কৃতী হাসপাতালের আইসিইউতে ঢুকে পড়ে। চন্দনকে গুলি করে খুনের পর দু’টি বাইকে চড়ে চম্পট দেয় তারা। ওই ঘটনায় প্রথম ধরা পড়েন মূল অভিযুক্ত তৌসিফ রাজা। পটনা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ বার ধরা পড়লেন বাকিরাও। ফলে এই নিয়ে পটনা-কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement