এক দিনের নোটিসে স্টল উচ্ছেদ, ক্ষোভ হাওড়ায়

এ দিন বড় ধরনের কোনও গোলমাল হয়নি। প্রথম দিকে কমিশন ভেন্ডারদের সংগঠন, বিজেপি-পরিচালিত ‘ইস্টার্ন রেল কেটারিং অ্যান্ড ভেন্ডার মোর্চা’র পক্ষ থেকে কিছু ক্ষণের জন্য বিক্ষোভ দেখানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:০১
Share:

উচ্ছেদ: ভেঙে ফেলা হচ্ছে স্টেশনের দোকান। শনিবার, হাওড়ায়। —নিজস্ব চিত্র

মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিসে বেআইনি ঘোষণা করে উচ্ছেদ করে দেওয়া হল হাওড়া স্টেশনের কমিশন ভেন্ডরদের ১৯টি স্টল। শনিবার দুপুরে রেলের এই উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা থাকায় হাওড়া স্টেশনে আরপিএফ জওয়ানদের বিশাল বাহিনীকে নামানো হয়।
তবে এ দিন বড় ধরনের কোনও গোলমাল হয়নি। প্রথম দিকে কমিশন ভেন্ডারদের সংগঠন, বিজেপি-পরিচালিত ‘ইস্টার্ন রেল কেটারিং অ্যান্ড ভেন্ডার মোর্চা’র পক্ষ থেকে কিছু ক্ষণের জন্য বিক্ষোভ দেখানো হয়। ওই সংগঠনের অভিযোগ, রেল জোর করে এই কাজ করেছে। রেলকর্তাদের বক্তব্য, যে সমস্ত স্টলের লাইসেন্স দীর্ঘদিন নবীকরণ করানো হয়নি, সেগুলি এ দিন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, একটি স্টলের লাইসেন্স নিয়ে যাঁরা একাধিক স্টল চালাচ্ছিলেন, তাঁদেরও কিছু স্টল ভাঙা হয়েছে।

Advertisement

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া স্টেশনের পুরনো ও নতুন কমপ্লেক্সের ভিতরে কমিশন ভেন্ডরদের যে সব স্টল রয়েছে, সেগুলি বর্তমানে রেলের আইআরসিটিসি-র অধীন। কমিশনের ভিত্তিতে রেলের অনুমোদিত ভেন্ডরেরা সেই সব স্টল চালান। রেলের কর্মাশিয়াল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে হাওড়া স্টেশন চত্বরে মোট ৯২টি স্টল ছিল। এর মধ্যে ১৪টিকে অনেক বছর আগেই বেআইনি ঘোষণা করে ভেঙে দিয়েছিল রেল। ২০০৪ সালে রেল কমিশন ভেন্ডরদের দায়িত্ব আইআরসিটিসি-কে দিয়ে দেয়। আগে নিয়ম ছিল, কোনও কমিশন ভেন্ডর মারা গেলে সেই জায়গায় তাঁর সন্তানদের নামে লাইসেন্স নবীকরণ করা যাবে। কিন্তু আইআরসিটিসি সেই নিয়ম তুলে দেওয়ায় কমিশন ভেন্ডরদের সংখ্যা কমে গিয়ে বর্তমানে ৪২ হয়ে গিয়েছে। কারণ, এর মধ্যে অনেক ভেন্ডরই মারা গিয়েছেন। অনেকের ৬০ বছর বয়স হয়ে‌ যাওয়ায় তাঁদের নাম কমিশন ভেন্ডরের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তালিকা থেকে বাদ গিয়েও অবশ্য অনেকে দিব্যি স্টল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ দিন তেমন কিছু স্টলও ভাঙা পড়েছে।

‘ইস্টার্ন রেল কেটারিং অ্যান্ড ভেন্ডার মোর্চা’র সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর জানার অভিযোগ, ‘‘আইআরসিটিসি গা-জোয়ারি করে এই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ২৬ জানুয়ারি নোটিস দিয়ে পরের দিনই ওরা স্টল ভেঙে দেয় কী করে? আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।’’

Advertisement

রেলের বক্তব্য, হাওড়া স্টেশনের ভিতরে ভেন্ডরদের অধিকাংশ দোকানেরই লাইসেন্স নবীকরণ করানো হয়নি। এমনকী, এমনও কয়েক জন ভেন্ডর ছিলেন, যাঁরা নিজেদের নামে লাইসেন্স নিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে দোকান চালাচ্ছিলেন। পূর্ব রেলের পদস্থ কর্তারা জানান, নিয়ম না-মানা এমনই ১৯টি স্টলকে চিহ্নিত করে শুক্রবার নোটিস দেওয়া হয়। তার পরে এ দিন উচ্ছেদ অভিযান চলে।

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘কমিশন ভেন্ডরদের অনেকেই দীর্ঘদিন লাইসেন্স নবীকরণ করাননি। কয়েকটি স্টল আবার অন্য লোককে দিয়ে চালানো হচ্ছিল। তাই ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন