বাসের ধাক্কায় জখম ২, অবরোধ

এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ টালিগঞ্জ প্রাইভেট রোডের বাসিন্দা, বছর বারোর কিশোর পুলকেশ নাইয়াকে নিয়ে রাস্তা পেরোচ্ছিলেন পাশের বাড়ির প্রৌঢ়া শান্তি ঘোষাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:২১
Share:

জনরোষ: পথ আটকে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার, চারু মার্কেট এলাকায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

প্রচার যতই চলুক, তাতে সচেতনতা বাড়ছে কি?

Advertisement

সে প্রশ্নই ফের তুলে দিল শুক্রবার সকালে শহরের বুকে ঘটে যাওয়া এক পথ দুর্ঘটনা।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ টালিগঞ্জ প্রাইভেট রোডের বাসিন্দা, বছর বারোর কিশোর পুলকেশ নাইয়াকে নিয়ে রাস্তা পেরোচ্ছিলেন পাশের বাড়ির প্রৌঢ়া শান্তি ঘোষাল। আচমকাই ৪০বি রুটের একটি বেসরকারি বাস দু’জনকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাসের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে যান শান্তিদেবী এবং পুলকেশ। বাসটিকে মোটরবাইক নিয়ে ধাওয়া করেন তাঞ্জি দাস নামে স্থানীয় এক যুবক। টালিগঞ্জ থানার কাছাকাছি সেটিকে ধরে ফেলেন তিনি। গ্রেফতার করা হয় চালককে। শান্তিদেবী ও পুলকেশকে ভর্তি করা হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে।

Advertisement

এ দিকে, দুর্ঘটনার পরে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চারু মার্কেট ও টালিগঞ্জ থানার পুলিশ। পৌঁছন ডিসি (এসএসডি) রূপেশ কুমার এবং এডিসিপি (সাউথ) অপরাজিতা রাই। পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের দেখেও অবশ্য এলাকাবাসীর ক্ষোভ কমেনি। উল্টে অবরোধকারীদের পুলিশ মারধর করেছে বলে অভিযোগ তুলে তাঁরা ক্ষোভ উগরে দেন।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, চারু মার্কেট এলাকায় স্থায়ী বাসস্টপ থাকলেও বাসগুলি দু’পা অন্তর যাত্রী তোলার জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে। তাই রাস্তা পারাপার করতে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়। এ দিন সেই কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে বলে তাঁদের দাবি। পাশাপাশি আরও অভিযোগ, ওই জায়গায় কোনও ট্র্যাফিক পুলিশ থাকেন না। রাস্তা পারাপারের জন্য সিগন্যাল খোলা থাকে মাত্র ১০-১৫ সেকেন্ড। ফলে বয়স্ক কিংবা শিশুদের নিয়ে রাস্তা পেরোতে সমস্যায় পড়তে হয়। অনেকেই ওই এলাকায় একটি ফুটব্রিজ তৈরির দাবি তোলেন।

অবরোধকারীদের ডিসি রূপেশ কুমার আশ্বাস দেন, ওই জায়গায় যাতে ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়, তা দেখা হবে। ফুটব্রিজ তৈরির প্রস্তাবও বিবেচনা করা হবে। এর পরে ১২টা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়।

এ দিকে, ছেলের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান পুলকেশের বাবা-মা। মা যমুনাদেবী কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘ছেলে টিউশন নিয়ে ফিরবে। তাই ওর ভাত বেড়ে রেখে এসেছিলাম। ও পিসিমার (শান্তিদেবী) সঙ্গে স্কুলে যায়। কাজে গিয়ে শুনি, এমনটা ঘটেছে।’’ চিকিৎসকেরা জানান, পুলকেশের মাথায় ও ঘাড়ে চোট লাগলেও সে বিপন্মুক্ত। আপাতত তার শারীরিক পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হবে। তবে শান্তিদেবীর কোমরে ও ডান কাঁধে চোট লাগায় এবং কনুইয়ের হাড় ভাঙায় তাঁকে নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন