চেতলায় একই পরিবারের অগ্নিদগ্ধ চার জনের মধ্যে মৃত্যু হল দু’জনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরও দু’জন। মৃতদের নাম দিলীপ মণ্ডল (৪০) এবং কার্তিক মণ্ডল (৮)। হাসপাতালে ভর্তি দিলীপবাবুর স্ত্রী বাসন্তী মণ্ডল (৩০) এবং তাঁর ছেলে সুজিত মণ্ডল (১২)।
পুলিশ সূত্রে খবর, দিলীপবাবু তাঁর পরিবার নিয়ে চেতলা সেতু সংলগ্ন টালি নালার পাশের বস্তিতে থাকতেন। তদন্তে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে বচসার জেরে তিনি নিজের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, ঘরে উপস্থিত ওই দু’টি ছেলে ও স্ত্রী গায়েও তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন তিনি। এর পরই বুধবার সকালে দু’জন হাসপাতালে মারা যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং দিলীপবাবুর এক প্রতিবেশী সোনা মুখোপাধ্যায় জানান, সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ দিলীপবাবুর ঘরে বসে তাঁর স্ত্রী বাসন্তী, ছোট ছেলে সুজিত এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোচারণের বাসিন্দা তাঁর এক ভাইপো কার্তিক বসে টিভি দেখছিল। তাঁর অন্য দুই ছেলে তখন বাড়িতে ছিল না। সোনাদেবী সেই সময়ে তাঁদের ঘরে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “হঠাত্ই দিলীপবাবুর সঙ্গে তার স্ত্রীর সাংসারিক বিষয়ে ঝগড়া শুরু হয়। এর পরেই, দিলীপবাবু ঘরের কোণায় জারে রাখা কেরোসিন তেল নিজের গায়ে ঢালেন। বাসন্তী এবং সামনে বসে থাকা কার্তিক ও সুজিতের গায়েও তেল ঢেলে দেশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।” মুহূর্তে দাউ দাউ করে সবার গায়ে আগুন ধরে যায়। আগুন লাগে ঘরেও। তবে আশপাশের কোনও ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়েনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকল। আশপাশের লোকজনও ছুটে আসেন। অগ্নিদদ্ধ অবস্থায় চারজনকেই ঘর থেকে বার করে বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দিলীপ পেশায় রিকশাচালক। তাঁর স্ত্রী এলাকায় পরিচারিকার কাজ করেন। এক প্রতিবেশী আরতি গোস্বামী বলেন, “দিলীপবাবু প্রায়ই মত্ত অবস্থায় বাড়ি এসে স্ত্রীর কাছে টাকা চাইতেন, মারধরও করতেন। এ নিয়ে অনেকদিন ধরেই অশন্তি ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও তিনি মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে এ নিয়েই ফের ঝামেলা হয়। তার পরই ওই ঘটনা।”