birth certificate

অভিযুক্ত তিন পুর কর্মী, জাল শংসাপত্রের চক্র কি ফের সক্রিয়

ফের ওই বিভাগে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন পুর স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৫০
Share:

ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরভবনে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র বিভাগে কি ফের সক্রিয় হয়েছে দালাল-চক্র? ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট সরবরাহের অভিযোগে সম্প্রতি পুরসভা নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ করেছে। সেই অভিযোগপত্রে পুর স্বাস্থ্য বিভাগের তিন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন পুরসভার সদর দফতরে কর্মরত। বাকি দু’জন বসেন ৯ ও ১৬ নম্বর বরো অফিসে। নিউ মার্কেট থানা সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে তিনটি ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেটের হদিস মিলেছে। আরও কোনও ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল কি না, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, শংসাপত্রের বিভাগটি পুর স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে।

Advertisement

পুরসভায় জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র সংক্রান্ত এই ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। পুর স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এই দালাল-রাজ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। ২০১৩ সালে ফুলবাগানে তিন নম্বর বরো অফিসে হানা দিয়ে দালাল-চক্রের হদিস মিলেছিল। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের তৎকালীন ম্যানেজার দেবাশিস সেনের অভিযোগ, ‘‘ম্যাজিস্ট্রেটের সই ও রাবার স্ট্যাম্প জাল করে স্পেশ্যাল রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট-এ বরো অফিস থেকে একসঙ্গে ৫০টি বার্থ সার্টিফিকেট বার করা হয়েছিল৷ দালাল ও এক শ্রেণির পুরকর্মীদের যোগসাজশেই ওই ঘটনা ঘটে। হাতেনাতে সেই দালালদের ধরেছিলাম। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’

পুর স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকেরা জানালেন, গত কয়েক বছরে নজরদারির জন্য জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র বিভাগে দালালদের দাপট কমেছিল। সাম্প্রতিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে নজরদারিতে কি গাফিলতি রয়েছে? ফের ওই বিভাগে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন পুর স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। ওই বিভাগ সূত্রের খবর, ২০১৩ সালের সেই জাল শংসাপত্রের সঙ্গে এখনকার জাল শংসাপত্রগুলির হুবহু মিল রয়েছে। ২০১৩-এ জাল শংসাপত্র ‘ইসু’ করার আগে ডিটিপি অপারেটরদের সরিয়ে দিয়ে কম্পিউটারের দখল নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ডিটিপি অপারেটরদের নাম ভাঁড়িয়ে এক শ্রেণির কর্মী জন্ম-তারিখ সংক্রান্ত ভুল তথ্য কম্পিউটারে তোলেন৷ শুক্রবার পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘তিন জনের নামে অভিযোগ হলেও পুলিশ ঠিকঠাক তদন্ত করলে সর্ষের মধ্যের ভূতও বেরিয়ে আসবে। যেমন ঘটেছিল ২০১৩-এ। সে বার ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই জাল শংসাপত্র তৈরির কাজ করেন কয়েক জন পুরকর্মী।’’

Advertisement

তবে যে তিন জনের নামে থানায় অভিযোগ হয়েছে, তাঁদের এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়নি। নিউ মার্কেট থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে। ওঁদের শীঘ্রই জেরা করা হবে।’’

ওই তিন জনের এক জন পুরসভার ৯ নম্বর বরোয় কর্মরত। ওই বরোর চেয়ারপার্সন দেবলীনা বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের বরোর এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। সদর দফতরে জানানো হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন