ডানলপে ৩০ কেজি সোনা লুঠ

‘দেরি হয়ে গিয়েছে, তাড়াতাড়ি বাইরে বেরোও’! পাণ্ডার কথা শুনে সোনার গয়না ভর্তি একটা সিন্দুক লুঠ করে নিয়ে দ্বিতীয় সিন্দুকে হাত না দিয়েই চম্পট দিয়েছিল হেলমেটে মুখ ঢাকা সশস্ত্র চার দুষ্কৃতী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১২
Share:

‘দেরি হয়ে গিয়েছে, তাড়াতাড়ি বাইরে বেরোও’! পাণ্ডার কথা শুনে সোনার গয়না ভর্তি একটা সিন্দুক লুঠ করে নিয়ে দ্বিতীয় সিন্দুকে হাত না দিয়েই চম্পট দিয়েছিল হেলমেটে মুখ ঢাকা সশস্ত্র চার দুষ্কৃতী।

Advertisement

শুক্রবার সকালে ডানলপ মোড়ে গয়না বন্ধক রেখে ঋণ-প্রদানকারী একটি সংস্থা থেকে প্রায় ৩০ কেজি সোনার গয়না লুঠ হয়। পুলিশ জানিয়েছে, লুঠ হওয়া সোনার বাজার দর প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা।

পুলিশ সূত্রে খবর, ডানলপ মোড়ের ওই ঋণ-প্রদানকারী সংস্থায় প্রায় ১৯৭৭ জন গ্রাহক গয়না বন্ধক রেখেছেন। এ দিন সকাল ৯টা ৫৫ মিনিট নাগাদ অফিস খোলা হয়। সেই সময় ম্যানেজার-সহ আরও চার পাঁচ জন কর্মী ছিলেন। অভিযোগ, সংস্থার দরজা খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো হেলমেটে মুখ ঢাকা এক যুবক ভিতরে ঢুকতে গেলে তাকে বাধা দিয়ে ম্যানেজার জানান, হেলমেট খুলে ভিতরে ঢুকতে হবে। এর পরে ওই যুবক হেলমেট খুলে ভিতরে ঢুকেই ম্যানেজার মনোজ কুমার স্বর্ণকারের পেটে রিভলবার চেপে ধরে। তখনই হেলমেটে মুখ ঢাকা আরও তিন জন দুস্কৃতী দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে অন্য কর্মীদের এক দিকে জড়ো করে দাঁড় করিয়ে রাখে। বাইরের দরজার পাশে লাগানো সিসি ক্যামেরায় কালো রঙ স্প্রে করে দেয় ডাকাতেরা।

Advertisement

কর্মীরা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, ম্যানেজারের মাথায় বন্দুক ধরে সিন্দুকের চাবি চায় তারা। ম্যানেজার তাদের জানান, তাঁর কাছে একটি চাবি রয়েছে। সেই সময় আর এক কর্মী ঢুকলে তাঁকেও আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দ্বিতীয় চাবি চায় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু চাবি না পেয়ে শুরু হয় মারধর। তখনই এক উচ্চপদস্থ কর্মী ঢুকলে তাঁকে বন্দুক দেখিয়ে দ্বিতীয় চাবিটি কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। এর পরে ম্যানেজারকে নিয়েই সিন্দুক খুলে গয়না ব্যাগে ভরতে শুরু করে এক দুষ্কৃতী। চার জনের মধ্যে এক জন বাদে সকলেই হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল। প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে লুঠপাট চলে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (জোন ২) ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, ‘‘১০টা ৩৫ মিনিট নাগাদ খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে।’’

ওই এলাকারই অন্য একটি দোকানের সিসিটিভি দেখে পুলিশ জেনেছে, নম্বর প্লেট ছাড়া নতুন একটি বাইক ও পুরনো একটি বাইকে চেপে এসেছিল ওই ডাকাতেরা। একটি বাইক নর্দান পার্ক ও অন্যটি রবীন্দ্রনগর হয়ে চলে গিয়েছে। ওই দুটি রাস্তা দিয়ে সহজেই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা যায়।

ঘিঞ্জি এলাকায় ডাকাতি করে চার জন হেলমেটে মুখ ঢেকে বড় দুটি ব্যাগ নিয়ে কী করে বেরিয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংস্থায় বিপদ ঘন্টি কেন বাজলো না, কেনই বা আগ্নেয়াস্ত্র-সহ নিরাপত্তা রক্ষী নেই, উঠছে সেই প্রশ্নও। সংস্থার কেউ জড়িত কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ডাকাতির খবর পেয়ে অনেক গ্রাহক ওই সংস্থার সামনে সন্ধ্যে পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে অবশ্য পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, গ্রাহকদের গচ্ছিত সমস্ত গয়নার বিমা করা রয়েছে। তাই গ্রাহকদের কোনও ক্ষতি হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন