আদালতের পথে ধৃতেরা। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র
মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ীর ই-মেল আইডি হ্যাক করে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগে কলকাতার দুই যুবককে গ্রেফতার করল মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। কলকাতা পুলিশের সাহায্য নিয়ে মঙ্গলবার রাতে চেতলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃত দুই যুবক জাহিদ আকবর ও শেখ সাবির একবালপুর এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে মধুসূদন দাগা নামে মুম্বইয়ের ওই ব্যবসায়ী মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চে অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে বলা হয়, তাঁর ই-মেল হ্যাক করে ব্যাঙ্কে একটি ভুয়ো ই-মেল পাঠানো হয়েছে। ব্যবসায়ীর তরফে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে পাঠানো সেই মেলে বলা হয়েছে, কলকাতার চেতলায় তাদেরই একটি শাখায় সীতা দাস নামে এক জনের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে হবে। ব্যবসায়ীর নির্দেশ মনে করেই কলকাতার সেই অ্যাকাউন্টে দু’দফায় ৩৫ লক্ষ টাকা পাঠিয়েও দেয় ব্যাঙ্ক।
নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে আচমকা ৩৫ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে টের পেয়ে নড়েচড়ে বসেন মধুসূদন। ব্যাঙ্কে খবর নিয়ে তিনি ই-মেলের কথা জানতে পারেন। তার পরেই মুম্বই পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। তদন্তে নেমে মুম্বই পুলিশ জানতে পারে কলকাতার ওই অ্যাকাউন্টটি ভুয়ো নামে খোলা হয়েছে। সীতা দাস নামে আসলে কেউ নেই। ব্যাঙ্কের নথি ঘেঁটে জানা যায়, কলকাতার ওই অ্যাকাউন্টে জমা পড়া টাকা কলকাতারই নির্দিষ্ট একটি এটিএম থেকে খেপে খেপে তুলে নেওয়া হচ্ছে। কোন এটিএম থেকে, কখন সেই টাকা তোলা হচ্ছে, সেই দিনক্ষণও জানতে পারে পুলিশ। এটিএমে বসানো ক্যামেরা থেকে সহজেই টাকা তুলতে আসা জাহিদ
ও সাবিরের ছবি চলে আসে পুলিশের হাতে।
পুলিশ জানিয়েছে, দিনে সাধারণ ভাবে এটিএম থেকে বড়জোর ৪০ হাজার টাকা তোলা যায়। প্ল্যাটিনাম কার্ড থাকলে দিনে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত তোলা যায়। পুলিশ যতক্ষণে তথ্য হাতে পায়, তার মধ্যে কয়েক লক্ষ টাকা তুলেও নিয়েছিল ওই দুই যুবক। বাকি টাকা তুলতে ওই দু’জন যে ফের ওই এটিএমে আসবে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত ছিল পুলিশ। সেই মতোই পরিকল্পনা করে ওই এটিএমের সামনেই ওত পাতে পুলিশের একটি দল। মঙ্গলবার রাতে বর্ধমান রোড ও আলিপুর রোডের সংযোগস্থলে ওই এটিএম থেকে টাকা তোলার সময়েই দুই যুবককে ধরে মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। বুধবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে হাজির করা হলে চার দিনের ট্রানজিট রিমান্ডের অনুমতি দিয়েছে আদালত। ধৃত দু’জনকে নিয়ে মুম্বই যাবে সেখানকার পুলিশ।