এই জানলারই গ্রিল খুলে পড়ে। মঙ্গলবার, হিন্দু স্কুলে। — নিজস্ব চিত্র
খেলতে খেলতে ক্লাসরুমের জানলা ধরে ঝুলছিল তিন জন। আচমকা লোহার গ্রিল ভেঙে পড়ে আহত হল চার খুদে ছাত্র। মঙ্গলবার সকালে কলেজ স্ট্রিটের হিন্দু স্কুলে এই ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে স্কুলের পরিকাঠামো এবং কর্তৃপক্ষের সচেতনতা, দুই নিয়েই। অনেকেরই বক্তব্য, যে স্কুলে নিত্য একরত্তি পড়ুয়াদের আনাগোনা, সেখানে এমন বেহাল পরিকাঠামোয় চলছে কী করে? কেনই বা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক ছিলেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ?
স্কুল সূত্রে খবর, আহত পড়ুয়াদের নাম অরিত্র পাল, অভিরূপ বিশ্বাস, অরিত্র দে এবং সোহম মণ্ডল। এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ খেলার ছলে ওই জানলার লোহার গ্রিল ধরে ঝুলছিল দ্বিতীয় শ্রেণির তিন ছাত্র অরিত্র, অভিরূপ এবং অরিত্র (দে)। আচমকাই স্ক্রু আলগা হয়ে গ্রিলটি খুলে পড়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আর এক খুদে পড়ুয়া সোহমের মাথায়। মাথা ফেটে যায় তার। বাকি তিন জনও গ্রিল থেকে পড়ে চোট পায়। স্কুল-কর্তৃপক্ষ ফোন করে ঘটনাটি অভিভাবকদের জানান। উপস্থিত অভিভাবকেরাই আহত শিশুদের কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সোহমের মাথায় তিনটি সেলাই পড়ে। তবে প্রত্যেককেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিনের ঘটনায় স্কুল-কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সোহমের মা মানসী মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় অন্য এক অভিভাবক হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু স্কুল-কর্তৃপক্ষের কেউ যাননি। শুধু অভিভাবককে জানালেই কি স্কুলের দায়িত্ব শেষ?’’ স্কুল-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি সামন্ত বলেন, ‘‘আমরা উদ্যোগী হয়ে ছাত্রদের হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এটি একটি দুর্ঘটনা। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরে অভিভাবকদের ফোন করে ওদের সুস্থতার বিষয়ে খোঁজও নেওয়া হয়েছে।’’
এ দিনের ঘটনা শুনে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী করে এমন ঘটল, খতিয়ে দেখতে হবে। হিন্দু স্কুলের মতো এমন ঐতিহ্যবাহী স্কুলে এই ঘটনা বেদনাদায়ক। দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে, তবে স্কুলের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। আহতদের চিকিৎসার প্রয়োজন হলে রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেবে।’’