না হয়, সকাল থেকে একটু পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে বেরিয়েছে, তা বলে কি না এত মারবে!
বাবা-মার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ ছিল সপ্তম শ্রেণির ছেলেটার। তাই পিটুনি খাওয়ার পরে মনে মনে ফন্দি এঁটেছিল উচিত শিক্ষা দিতেই হবে! আর তাই মার খেয়ে ফের বাড়ি থেকে পালানোর সময়ে পাতকুয়োয় ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল বড়সড় পাথর।
শনিবার বিকেলে পাতকুয়োয় ভারী কিছু পড়ার শব্দে চমকে উঠেছিলেন লিলুয়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা প্রিয়াংশু সিংহের বাবা-মা। দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পাতকুয়োয় উঁকি মেরে দেখেছিলেন জল নড়ছে। কিন্তু ছেলে কোথাও নেই। এর পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। কেন এত মারধর করলেন, তা নিয়ে আফশোস করতে থাকেন। কান্নাকাটি শুনে চলে আসেন প্রতিবেশীরাও। এক সময় নিজে পাতকুয়োয় নেমে ছেলেকে খোঁজার চেষ্টা করেন বাবা প্রমোদ সিংহ। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে উপরে উঠে এসে খবর দেন পুলিশে। লিলুয়া থানার পুলিশ ও দমকলে দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। ভিড় জমতে শুরু করে প্রিয়াংশুদের বাড়িতে।
পাতকুয়োয় পাইপ নামিয়ে জল তুলতে শুরু করেন দমকলকর্মীরা। আর সকলে প্রমাদ গুনতে থাকেন কতক্ষণে দেখা যাবে ছোট্ট ছেলেটাকে। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে এত কাণ্ড চলার পরে অবশ্য পাওয়া গেল প্রিয়াংশুকে। কিন্তু পাতকুয়ো থেকে নয়! উদ্ধারকাজ চলার সময়েই প্রতিবেশী কয়েক
জন যুবক খেয়াল করেন কিছুটা দূরের ঝোপ জঙ্গলের ভিতরে বসে রয়েছে কেউ এক জন। মাঝেমাঝে জঙ্গল সরিয়ে কেউ যেন উঁকি দিচ্ছে। সামনে যেতেই দেখা গেল জঙ্গলে ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে প্রিয়াংশু। কেন করলি এমন? উত্তর এল-‘একটু ঘুরেছি বলে এত মারবে!’