গাড়িচালকের দেহ উদ্ধার, পরিবারের অভিযোগ খুন

শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নিমতার পূর্বপাড়ায়। মৃত চালকের নাম কার্তিক ঘোষ। পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা থানাতেও জানিয়েছেন। ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা, দেখছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

বেতন নিয়ে রবিবার সকালেই দেশের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল বছর চল্লিশের গাড়িচালকের। কিন্তু, শনিবার সকাল থেকে তাঁকে কোনও ভাবেই ফোনে ধরতে পারছিলেন না পরিজনেরা। এর পরে তাঁরা ওই গাড়িচালকের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যে বাড়িতে ওই চালক থাকতেন, সেখানকার তালা খুলে ঢুকতেই দেখা যায় দোতলার সিঁড়ির রেলিংয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পড়ে আছেন ওই ব্যক্তি।

Advertisement

শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নিমতার পূর্বপাড়ায়। মৃত চালকের নাম কার্তিক ঘোষ। পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা থানাতেও জানিয়েছেন। ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা, দেখছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা কার্তিক প্রায় ১৮ বছর ধরে নিমতার বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক শ্যামাপদ দাসের গাড়ি চালাতেন। শ্যামাপদবাবু সল্টলেকে থাকলেও কার্তিক থাকতেন নিমতা পূর্বপাড়ায়, তাঁর মালিকের পৈতৃক বাড়ির দোতলায়। ওই বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকেন হীরক বড়ুয়া নামে এক শিক্ষক।

Advertisement

পুলিশ জেনেছে, দিন কয়েক আগে স্ত্রী শম্পাকে ফোন করে কার্তিক জানিয়েছিলেন, তিন-চার জন যুবক রাতে বাইকে চেপে এসে বাড়ির দরজায় ধাক্কা দিয়ে তাঁকে ডাকাডাকি করেছিল। এমনকি, প্রাণে মারারও হুমকি দেয়। শম্পা বলেন, ‘‘দরজায় ধাক্কা শুনে ও ভয়ে লুকিয়ে পড়েছিল। তখন শুনতে পেয়েছিল, নীচের মাস্টারমশাই ওই যুবকদের বলছেন, ‘কার্তিক ভাল ছেলে। ওঁকে মারিস না।’ আমার স্বামী এ-ও বলেছিল, এই হুমকির পিছনে শ্যামাপদবাবুর এক ভাইঝি ও তাঁর স্বামী জড়িত।’’ শম্পা আরও জানান, শুক্রবার রাতে কথা বলার সময়েও আতঙ্কের কথা জানিয়ে ছিলেন কার্তিক। শনিবার সকাল থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে নিমতায় চলে আসেন শম্পারা। কিন্তু বাড়ির দরজায় তালা দেখে তাঁরা শ্যামাপদবাবুর কাছে যান। ওই চিকিৎসক তখন হীরকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়ির মূল দরজার চাবি থাকত হীরক ও কার্তিকের কাছে। হীরক জানান, তিনি শনিবার সকালে কাজে বেরিয়েছিলেন। শ্যামাপদবাবুর ফোন পেয়ে ফিরে দেখেন, দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝে পড়ে আছেন কার্তিক। শম্পা বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে। শ্যামাপদবাবু বাড়ির একতলা ওঁকে দান করে দেবেন বলেছিলেন। তা হাতাতেই চিকিৎসকের আত্মীয়রেরা এমন করেছেন।’’

যদিও শ্যামাপদবাবু বলেন, ‘‘সম্পত্তি কেন ওঁকে দিতে যাব? সব বাজে কথা। আর আমার বড় ভাইঝির পরিবার তো বেলেঘাটায় থাকে। তাঁরাই বা কেন সম্পত্তির বিষয়ে কার্তিকের সঙ্গে কথা বলবে? কে বা কারা, কী উদ্দেশ্যে ওঁকে খুন করবে বুঝতে পারছি না।’’ কয়েক দিন ধরে রাতে কয়েক জন বাড়িতে এসে দরজায় ধাক্কা দিয়ে তাঁকে হুমকি দিচ্ছিল বলে শ্যামাপদবাবুকে জানিয়ে ছিলেন কার্তিক। সে ব্যাপারে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘প্রতিবেশীরা বা হীরক— কেউই এমন ঘটনার কথা জানেন না বলেছিলেন। কার্তিকের যে কিসের ভয় হচ্ছিল, বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন