রিয়া চৌধুরী
মিডলটন রো-র একটি হস্টেলের শৌচাগার থেকে সোমবার রাতে উদ্ধার হয়েছিল কলেজ-ছাত্রী রিয়া চৌধুরীর (১৯) ঝুলন্ত দেহ। মঙ্গলবার ময়না-তদন্তের পরে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকেরা জানান, এটি আত্মহত্যা। তবে রিয়ার এমন পরিণতি কিছুতেই মানতে পারছেন না তাঁর আত্মীয়েরা।
পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, পড়াশোনার জন্য বছর দুই আগে কলকাতায় আসেন আদতে জামশেদপুরের বাসিন্দা রিয়া। তাঁর বাবা রাজেশকুমার চৌধুরী জামশেদপুর স্টিল প্লান্টের কর্মী। রাজেশবাবুর এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে জামশেদপুরে পড়াশোনা করে। মধ্য কলকাতার একটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রিয়া। থাকতেন কলেজের কাছেই হস্টেলে। গত কয়েক দিন ধরে তাঁর প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলছে। সোমবারও অর্থনীতির পরীক্ষা দিয়ে বিকেল ৫টা নাগাদ হস্টেলে ফেরেন তিনি।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, সন্ধ্যায় কলেজ থেকে ফিরে শৌচাগারে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন রিয়া। হস্টেলের আবাসিকেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রায় দু’ঘণ্টা পরেও দরজা না খোলায় তাঁরা প্রথমে হস্টেলের রাঁধুনিকে ডেকে আনেন। তিনি মই দিয়ে উঠে দেখেন, শাওয়ারের রড থেকে ওড়নার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় রিয়ার দেহ ঝুলছে। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে এসএসকেএমে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা রিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সোমবার রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান রিয়ার আত্মীয়েরা। মঙ্গলবার জামশেদপুর থেকে এসে পৌঁছন তাঁর মা, বাবা ও ভাই। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সোমবারই হিন্দি পরীক্ষার খাতা হাতে পান রিয়া। সেই ফল আশানুরূপ হয়নি। পাশাপাশি, অর্থনীতির পরীক্ষাও ভাল না হওয়ায় তিনি কিছুটা আতঙ্কিত ছিলেন। পুলিশের অনুমান, পড়াশোনায় চাপের কারণে কিছু দিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই ছাত্রী।
মঙ্গলবার এসএসকেএম-এর মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে রিয়ার এক আত্মীয় বলেন, ‘‘পড়াশোনায় বরাবর ভাল ছিল মেয়েটা। কী যে হয়ে গেল, বুঝতেই পারছি না।’’ ওই হস্টেলের অন্য আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রিয়া কলেজের ছাত্রী ছিলেন, সেখানেও যোগাযোগ করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে রিয়ার মোবাইলের কল-লিস্টও। এটি আত্মহত্যা না মৃত্যুর পিছনে অন্য কারণ আছে, তা-ও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।