Calcutta High Court on Nursing Colleges

‘টাকা কামানোর ফন্দি’! রাজ্যে নার্সিং কলেজ কত? কী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়? দুই ছাত্রীর মামলায় রিপোর্ট তলব করল হাই কোর্ট

সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি নার্সিং কলেজের দুই ছাত্রী হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, প্রথম বর্ষের পড়াশোনা শেষে হঠাৎ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, পর্যাপ্ত পড়ুয়া নেই। তাই কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৪৫
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে নার্সিং কলেজ। প্রশিক্ষণের নামে টাকা কামানোর ফন্দি করা হচ্ছে। দুই নার্সিং পড়ুয়ার দায়ের করা মামলায় এমনই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। শুধু তা-ই নয়, রাজ্যে এমন নার্সিং কলেজের সংখ্যা ঠিক কত, সেখানে কেমন প্রশিক্ষণ হয়, এমন গুচ্ছ প্রশ্ন তুলে অডিটের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। মঙ্গলবার রাজ্যের নার্সিং কাউন্সিলকে উচ্চ আদালতের নির্দেশ আগামী ৬ মাসের মধ্যে অডিট রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

Advertisement

সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার একটি নার্সিং কলেজের দুই ছাত্রী হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, প্রথম বর্ষের পড়াশোনা শেষে হঠাৎ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, পর্যাপ্ত পড়ুয়া নেই। তাই কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁরা এক বছর ধরে ওই কলেজে পড়াশোনা করেছেন। প্রায় ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে নার্সিং কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। কী ভাবে আচমকা এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কলেজ কর্তৃপক্ষ? প্রথমে দুই ছাত্রী সংশ্লিষ্ট নার্সিং কাউন্সিলে অভিযোগ করেন। কিন্ত সেখান থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে দাবি। মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানিতে সংশ্লিষ্ট কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ন’জন ট্রাস্টিকে ব্যক্তিগত ভাবে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তাঁরা উপস্থিতও হয়েছিলেন। আদালতের কাছে সকলে অভিযোগের সত্যতা মেনে নেন। কিন্তু এ-ও জানান, এত কম সংখ্যক পড়ুয়া নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে তাঁরা অপরাগ।

সওয়াল-জবাবের পরে বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ, ‘‘রাজ্য জুড়ে এমন কত কলেজ খুলেছে, আর কত বন্ধ হচ্ছে, তার কোনও হিসাব নেই। অথচ রাজ্যের হাজার হাজার ছেলেমেয়ে মোটা টাকা দিয়ে এমন সব কলেজে ভর্তি হচ্ছেন।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘ব্যবসা না চললেই মালিকেরা ঝাঁপ বন্ধ করে দিচ্ছেন। যাঁরা ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের কোনও দায়িত্ব নিচ্ছেন না। কোনও নজরদারি নেই! এটা চলতে পারে না।’’

Advertisement

আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যে ট্রাস্টি করে শুধু নার্সিং কলেজই নয়, স্কুলও চলছে। বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘শিক্ষা চলে গিয়েছে ট্রাস্টের হাতে। সরকারের হাতে এদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।’’ এর পরেই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, অডিট করতে গিয়ে কোনও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেআইনি কিছু পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করবে কাউন্সিল।

আর সংশ্লিষ্ট মামলার প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট জানিয়েছে, মামলাকারী ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। তাই ওই ন’জন ট্রাস্টিকে এক লক্ষ টাকা করে নার্সিং কাউন্সিলকে জমা দিতে হবে। ওই টাকা নিয়ে কাউন্সিল দায়িত্ব নিয়ে দুই ছাত্রীকে কোনও কলেজে ভর্তি করিয়ে দেবে। তার পরেও যদি কিছু টাকা বেঁচে যায়, সেটা উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement