উলফ ডায়াড্রিচ গোয়েসলার
ভারত তাঁকে টানে। মাঝেমধ্যেই চলে আসেন এ দেশে। সংস্কৃত শেখেন। এ দেশের সংস্কৃতির নিদর্শন দেখতে একা ঘোরেন। ভারতের আধ্যাত্মিকতা নিয়েও পড়াশোনা করেছেন তিনি। ৭৫ বছরের সেই উলফ ডায়াড্রিচ গোয়েসলার, আদতে অস্ট্রিয়ার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা থেকে দুবাই হয়ে ভিয়েনা যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। পৌঁছেও গিয়েছিলেন কলকাতা বিমানবন্দরে। বোর্ডিং গেটের সামনে আচমকা ঢলে পড়েন গোয়েসলার। প্রথমে বিমানবন্দরের চিকিৎসকেরা তাঁকে দেখেন। পরে গোয়েসলারকে পাঠানো হয় চার্ণক হাসপাতালে।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে গোয়েসলার জানান, আচমকা চোখের সামনে অন্ধকার নেমে জ্ঞান হারানোর ঘটনা আগেও হয়েছে। অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দনের সমস্যা রয়েছে তাঁর। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। ছেলে থাকেন ভিয়েনায়। তিনি একাই থাকেন অস্ট্রিয়ার গ্রাজ শহরে। গত ডিসেম্বরে ভারতে এসেছিলেন। ভুবনেশ্বর, পুরী ঘুরে বুধবারই ফিরেছিলেন কলকাতায়।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অস্ট্রিয়া দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সাধারণত এ ভাবে কোনও বিদেশি অসুস্থ হলে তাঁর চিকিৎসার খরচ বহন করে সে দেশের দূতাবাস। কারণ চিকিৎসা করার মতো অত টাকা বিদেশির সঙ্গে থাকে না। এ দিন গোয়েসলার বলেন, ‘‘আমার বিমা করা আছে। সে সংক্রান্ত কাগজও সঙ্গে রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলে ভিয়েনার ওই বিমা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’’
এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার সময়ে ভারতের আকাশে অসুস্থ হওয়ায় বিদেশিকে নামিয়ে দেওয়ার সম্প্রতি সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। তবে এ সব ক্ষেত্রে ওই অসুস্থ ব্যক্তির ভারতে থাকার ভিসা না থাকায় সে সব দূতাবাসকেই সামলাতে হয়। গোয়েসলারের ক্ষেত্রে সে সমস্যা নেই। মে পর্যন্ত ভারতে থাকার ছাড়পত্র রয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘আমার কেউ নেই। সুস্থ হয়ে একাই ফিরব। আমাকে দেখতে এত দূরে কেউ আসবে না।’’